যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাদের ঈমান হতে হবে সংশয়মুক্ত ও দ্বিধাহীন। কেননা ঈমান নিশ্চিত বিশ্বাসের নাম, ধারণাপ্রসূত দুর্বল বিশ্বাসের নাম ঈমান নয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনে, পরে সন্দেহ পোষণ করে না। ’ (সুরা হুজরাত, আয়াত : ১৫)
আল্লামা ইবনে জারির তাবারি (রহ.) বলেন, ‘সন্দেহ পোষণ করে না’ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মুমিন আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসুল (সা.)-এর নবুয়তের ব্যাপারে সংশয় পোষণ করে না।
সে নিজের ওপর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য এবং যেসব বিধান দান করা হয়েছে, তা দ্বিধাহীনভাবে আবশ্যক করে নেয়। ’ (তাফসিরে তাবারি : ২১/৩৯৫)
ইমাম শাওকানি (রহ.) ‘সন্দেহ পোষণ করে না’-এর ব্যাখ্যায় বলেন, তাদের অন্তরে কোনো সংশয় প্রবেশ করেনি এবং কোনো ধরনের সংশয় তাদের পেয়ে বসে না। এ জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। যে বান্দা কোনো সংশয় ছাড়া এই দুই সাক্ষ্যসহ আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৭)
আবুল আব্বাস কুরতুবি (রহ.) বলেন, ‘এই হাদিস দ্বারা স্পষ্টত প্রমাণিত হয় যে ব্যক্তি আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেওয়া অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। এই কথা সে ব্যক্তির জন্য সত্য যে কবিরা গুনাহমুক্ত থাকবে। কবিরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি যদি মৃত্যুর আগে তাওবা না করে, তবে তার ক্ষমা লাভ ও শাস্তি পাওয়ার বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছাধীন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করা ক্ষমা করেন না। এটা ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে কেউ আল্লাহর শরিক করে সে এক মহাপাপ করে। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৪৮)।