1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন

সওজে ঠিকাদার সিন্ডিকেট “তারাই ভাঙেন- তারাই গড়েন”

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
সওজে ঠিকাদার সিন্ডিকেট “তারাই ভাঙেন- তারাই গড়েন”
★ কর্মকর্তাদের আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ থাকলেও হচ্ছে না তদন্ত। ★ দুর্নীতির টাকায় গড়ছে বাড়ি গাড়ি ও হেলিকপ্টার। ★ অসাধু কর্মকর্তাদের রিসার্চের গিনিপিগ অসহায় ঠিকাদার।

মুস্তাকিম নিবিড়ঃ

বিগত সময়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অসামান্য সফলতা তাক লাগিয়েছে সারা বিশ্বকে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে সফলতার পেছনে রয়েছে অসংখ্য মেধাবী ও কঠোর পরিশ্রমী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। যেমনটি প্রদীপের নিচে থাকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, তেমনি সে সফলতার সুযোগ নিয়ে রাতারাতি কুঁড়েঘর থেকে দেশ পেরিয়ে বিলেতেও অট্টালিকা গড়েছেন শতাধিক সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন। দামি দামি গাড়িতেই শেষ নয়, টাকার গরমে নাকি তারা এখন হেলিকপ্টারও কিনে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন এক চিঠিতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অফিসের এক হিসাব রক্ষকের মালিকানায় থাকা আকাশযানের হিসাব চেয়েছে। তাতেই প্রশ্ন জাগে, একজন সামান্য হিসাব রক্ষকের ব্যাক্তিগত হেলিকপ্টার থাকলে বড় বড় কর্মকর্তাদের আর কি না রয়েছে? সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির সাথে সখ্যতা করলেই নাকি বনে যাওয়া যায় ধনকুবের। রূপকথার মত হাতিশালের হাতি ঘোড়াশালের ঘোড়া না থাকলেও তাদের রয়েছে গ্যারেজ ভরা গাড়ি, এমনকি উড়ন্ত হেলিকপ্টার!

সম্প্রতি কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন, সড়ক ও জন পথ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকৌশলীরা নিজ দুর্নীতি ও অনিয়ম আড়াল করতে তাদের কালো তালিকা ভুক্ত করছেন।

কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদারগণ যদি কাগজ জালিয়াতির মাধ্যমে টেন্ডার পেয়ে থাকে তাহলে যাচাই-বাছাইয়ের সময় সংশ্লিষ্ট জনেরা কি করেছেন?  বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় রাস্তা থেকে তুলে এনে অনেক কর্মকর্তাই ঠিকাদার বানিয়েছেন অনেককে, ভুয়া জ্বাল জালিয়াতির কাগজ তারাই বানিয়ে দিয়েছেন। অনভিজ্ঞদের হাতে তুলে দিয়েছেন ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ। ঠিকাদারদের সামনে রেখে তারাই নেড়েছেন কলকাঠি, “লুটেছেন কমিশন – লুটেছেন সরকারি টাকা” ঠিকাদারদের কাঁধে বন্দুক রেখে নিজ নিশানায় পৌঁছানো যেনো রীতিতে পরিণত হয়েছে। অসাধু কর্মকর্তারা নিজেরাই গড়েন ঠিকাদার সিন্ডিকেট, বাগিয়ে দেন টেন্ডার, অতঃপর নিজেদের দুর্নীতি ও অনিয়ম আরাল করতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সহায়তায় ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করিয়ে তাদেরকে অভিযুক্ত সভ্যস্ত করে কালো তালিকাভুক্ত করতে বাধ্য করেন, এতে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে অনেক উদীয়মান ঠিকাদার ব্যবসায়ী ও তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও খেটে খাওয়া হাজারো দিনমজুর। কর্মকর্তা প্রকৌশলীদের কাছে যেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ দুর্নীতির বিজ্ঞানাগারের গিনিপিগ।

সম্প্রতি কয়েকটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মকর্তারা বলেন, “সওজ কর্মকর্তা প্রকৌশলীরা একেক জন নিজেদের ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া রেজিমেন্ট এর কর্মকর্তাদের মতো মনে করেন, কাজ পতে হলে ঠিকাদার মালিকরা স্যার স্যার বলে তাদের আশেপাশে ঘুরতে হয়। বাসায় বাজার করে দেওয়া থেকে শুরু করে গাড়ি বাড়ি ফ্ল্যাট কিনে দিতে হয়। বিল আটকে রেখে স্যারেরা করেন  কমিশন বাণিজ্য। আমরা ঠিকাদাররা কোনরকম পেটে পিঠে বেঁচে থাকলেও তারা গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। সম্প্রতি মন্ত্রী মহোদয়ের শুদ্ধি অভিযান শুরু হলে নিজেদের গা ঢাকা দিতে কিছু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কে কালো তালিকাভুক্ত করে নিঃস্ব করে দিচ্ছেন অসাধু কর্মকর্তারা। মন্ত্রী মহোদয় একজন সৎ ব্যক্তি তাইতো এই সেক্টরে এত সফলতা, আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মাধ্যমে মন্ত্রী মহোদয়ের দৃষ্টিগোচর করুন। ওসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা প্রকৌশলীদের মুখোশ খুলে ধরুন ”

বিভিন্ন পত্রপত্র পত্রিকায় হর হামেশাই দেখা যায় অসাধু কর্মকর্তা-প্রকৌশলীদের আয় বহির্ভূত সম্পদের সংবাদ, গত বছর কোনো কর্মকর্তা বা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে পত্রপত্রিকায় আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ পেলেই তড়িৎ গতিতে তদন্তের নির্দেশ দিলেও চলতি বছরে যেন অসাধু কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত দিতে খানিকটা নরম অবস্থায় দেখা যাচ্ছে অত্যন্ত পরিশ্রমী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সচিব এবিএম আমিনউল্লাহ নূরীকে। এ সুযোগে অসাধু কর্মকর্তা প্রকৌশলীরা নানান অনিয়মে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অসাধুদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে গড়ে তোলা আয় বহির্ভূত সম্পদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও তদন্তের আওতায় না থাকায় ধড়া কে সড়া মনে করছে না তারা। দুর্নীতি অনিয়মের মাত্রা কতোটা বেড়ে গেলে সরাসরি দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপে একজন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অফিসের হিসাব রক্ষকের হেলিকপ্টারের মালিক হওয়া ও তার পরিবারের সকল সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি দেয় দুদক? এসব ঘটনায় বিব্রত হচ্ছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সিংহভাগ সৎ মেধাবী ও কঠোর পরিশ্রমী কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীগণ। এবং বিভিন্ন মহলের বোদ্দাগণ মনে করেন এসব কতিপয় মুষ্টিমেয় অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অসামান্য সফলতা যেনো কোন কিছুতেই ম্লান না হয়। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতিবাজদের সময় শেষ। দুর্নীতিবাজ, সে যেই হোক না কেনো এবার খেলা হবে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে।

যে সকল কর্মকর্তা প্রকৌশলীগন নিজ দুর্নীতি ও অনিয়ম ঢাকতে অসহায় ঠিকাদারদের কালো তালিকাভুক্ত করে নিজেরাই কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন, করছেন সরকারের সফলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের মুখোশ উন্মোচন করবে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি, এসব অসাধু সিন্ডিকেটের  অনিয়মের বিস্তারিত থাকবে পরবর্তী প্রতিবেদনে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি