বয়স বিবেচনা না করে সকলের জন্য করোনার টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করতে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে করোনা মোকাবেলায় স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি নোটিশ দেয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী শনিবার ( ২৪ এপ্রিল) এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার ৪০ বছরের বয়স সীমা নির্ধারণ করায় এর নিচের বয়সী যারা বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন তারা দুর্গতিতে পড়েছেন। কারণ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে যারা বিভিন্ন ক্রনিক স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন তারা অতি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
এদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। কাজেই যারা ৪০ বছরের নিচে অথচ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জনিত সমস্যায় রয়েছেন তাদেরকেও বয়স বিবেচনা না করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং জীবন ধারণের অধিকার প্রত্যেকটি মানুষের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার। সবাইকে মরনঘাতী ভাইরাসের টিকা প্রদান করা সরকারের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব এবং প্রত্যেক নাগরিকের এই টিকা পাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার।
নোটিশে আরো বলা হয়েছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনাভাইরাস আরো বেশি আগ্রাসী। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে এবং শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। করোনাভাইরাস প্রতিনিয়তই তার রূপ পাল্টে নতুন নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। বিভিন্ন স্টাডি ও গবেষণার রিপোর্ট থেকে প্রতীয়মান হয় যে, করোনা ভাইরাস শীঘ্রই নির্মূল হচ্ছে না।
বরং এটি আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর স্থায়ী হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রয়োজন জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত পরিকল্পনা। ভারতের মত পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সরকারকে এখনই স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
একইসঙ্গে করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধ, অক্সিজেন এবং ১৮ বছর বয়সী সকল নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত টিকা ক্রয় করে তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নোটিশে বলা হয়েছে। নোটিশপ্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে হাইকোর্টে রিট করা হবে।
মানবাধিকার সংস্থা ল’ এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির পল্লব ও মোহাম্মদ কাওছার ই-মেইল যোগে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনা সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।