1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

সচল হয়নি ইউনিভার্সালের ২৭০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির মামলা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০২১

পাবনার ইউনিভার্সাল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে একই সময়ে ১২২ কোটি টাকা কর ফাঁকির বিষয়টি উদঘাটন করেছে পাবনা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ।

কিন্তু রহস্যজনক কারণে দীর্ঘ আট মাসেও সচল হয়নি এ ঘটনায় করা মামলার কার্যক্রম।

১ জুলাই ২০১৫ থেকে ২০১৮ এর ৩০ জুন পর্যন্ত সময়সীমায় অডিটে ৯৬ লাখ টাকা কর ফাঁকির বিষয়টি ধরা পড়ে। ১৯৯১ এর ৫৫ (৩) অনুসারে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করে ইউনিভার্সাল গ্রুপ অব ইন্ড্রস্টিজকে যাবতীয় সরকারি কর পাওনা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

পরে আবার অডিট হলে সরকারের পাওনা করের পরিমাণ উদঘাটন হয় ১২২ কোটি টাকা। এ বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি অডিট করে উদঘাটন করেন পাবনার উপ-কর কমিশনার (কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট) মো. জাহিদুল ইসলাম। তিনি ইউনিভার্সাল গ্রুপের মোট কর ফাঁকির পরিমাণ উদঘাটন করেন ২৬৯ দশমিক ১৭ কোটি টাকা। এ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির ১২টি মামলা দায়ের করেন তিনি। তাই মো. জাহিদুল ইসলামকে এ ঘটনার পরে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

সরকারি রাজস্ব কেন এতো কম দেখিয়ে চূড়ান্ত দাবিনামা দেওয়া হলো, তা তদন্ত করার দাবি উঠেছে।

২০২০ সালের ১২ জুলাই নয়টি এবং ১৫ জুলাই তিনটি- মোট ১২টি মামলার মাধ্যমে সুদসহ ২৬৯ দশমিক ১৭ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির মামলা রজু করা হয়। দীর্ঘ প্রায় আট মাস অতিবাহিত হলেও এ মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। মামলাগুলোর কার্যক্রম চালুর বিষয়ে রাজশাহীর বিভাগীয় কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনারেট থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এখনো পাঠানোই হয়নি। ফলে মামলাগুলোর কার্যক্রম চালু হয়নি।

একটি দুষ্টচক্র মোটা টাকা উৎকোচ নিয়ে মামলাগুলোকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহীর কর কমিশনার লুৎফর রহমান বিষয়টি প্রতিহিংসামূলক এবং মিথ্যা মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে জানিয়ে এর প্রতিকার চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত ইউনিভার্সাল গ্রুপকে মদদ দিচ্ছেন রাজশাহী বিভাগীয় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কোনো কোনো কর্মকর্তা। মামলা দায়েরকারী কর্মকর্তাকে কৌশলে সরিয়ে (বদলি) দেওয়ার নানা চেষ্টা চলছে বলেও জানা গেছে।

বিশাল এ কর ফাঁকির মামলা নিয়ে চলছে লুকোচুরি। মো. জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছেন ইউনিভার্সাল গ্রুপের মালিক। আর এ অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটির বিষয়ে তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো কর কর্মকর্তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মোটা অর্থ উৎকোচ নিয়ে কর বিভাগেরই একটি চক্র আসামিপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে মামলাটিকে মিথ্যা প্রমাণের অপচেষ্টা করছে।

মাসিক রিটার্ন যাচাই, বাজার যাচাই এবং ব্যাপক রাজস্ব ফাঁকি হচ্ছে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইউনিভার্সাল গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান ১. ইউনিভার্সাল ফুড লিমিটেড, ২. তরঙ্গ প্যাকেজিং ৩. তরঙ্গ ট্রেডার্স ও ৪. রত্নদ্বীপ রিসোর্ট পাবনার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, পাবনার একটি প্রিভেন্টিভ টিমের উপ-কমিশনার মো. জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০২০ সালের ৯ জুলাই একযোগে অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক তথ্য উদঘাটনের স্বার্থে বেশ কিছু বাণিজ্যিক নথিপত্র বা দলিলাদি ও কম্পিউটারের সিপিইউ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত নথিপত্র যাচাই বাছাই করে এবং সিপিইউ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটিত হয়।

ইউনিভার্সাল গ্রুপের উক্ত প্রতিষ্ঠান চারটি বিগত ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত (পাঁচ বছর) মোট ২৬৯ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার ২৪৬ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে বলে জানা গেছে।

এতো বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির বিপরীতে কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ পাবনার উপ-কর কমিশনার কর্তৃক ভ্যাট আইনে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মোট ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কর কমিশনার লুৎফর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

এ কর ফাঁকির বিষয়ে পাবনা জেলা কাস্টামস এক্সাইজ ও ভ্যাটের উপ-কর কমিশনার মো. জাহিদুল ইসলামের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, তিনি এসব অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

রাজস্ব কর ফাঁকির বিষয়ে ই্উনিভার্সাল গ্রুপের এজিএম ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ছোট ভাই হিমানী শাহারিয়ার কনকের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেন। তবে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পরে কথা বলছি বলে ফোন কেটে দেন। পরে আর ফোন ধরেননি তিনি।

কর ফাঁকির মামলার বিষয়ে জানতে পাবনা ইউনিভার্সাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহানী হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি