হেফাজতের ইসলাম বাংলাদেশের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। নানা বিষয় নিয়ে সম্প্রতি তাকে আলােচনার শেষ নেই। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে নারী কেলেঙ্কারীর মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের কাছে তিনি পরিচিত। এছাড়াও ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি এবং ২৬ ও ২৭ মার্চের তাণ্ডবের ঘটনায় তার নাম ঘুরে ফিরেই সামনে চলে এসেছে। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রথম দফায় ৭ দিন রিমান্ড শেষে এখন দ্বিতীয় দফায় তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আর রিমান্ডে গিয়েই তিনি একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন। যে তথ্যগুলোতে স্বয়ং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও অবাক হচ্ছেন। লেবাসের আড়ালে এমন কোনো অপকর্ম নেই যেটি মামুনুল হক করেন নি।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ মামুনুল তার স্ত্রীর বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার প্রথম স্ত্রী ছাড়া অন্য দুই স্ত্রী চুক্তিভিত্তিক। মানে তাদের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্কের প্রমাণ পায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এখন তার প্রথম স্ত্রীও তার বিরুদ্ধে মামলার চিন্তা-ভাবনা করছেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণাও মামুনুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করবেন। এর ফলে বউ এর দিক থেকে বিরাট বিপাকে পড়েছে মামুনুল হক। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমি দখলসহ আরো নানা ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। যার ফলে মামুনুলের থলের বিড়াল বের হয়ে আসছে। এর ফলে মামুনুলের এদিক-ওদিক সব দিকই যাচ্ছে।
মামুনুলের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধারের পর সামনে আসছে আরো নানা বিষয়। সরকার পতনে দীর্ঘ মেয়াদের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে মাদ্রাসা ছাত্রদের ব্যবহার করে ক্ষমতায় যেতে হেফাজতের সহিংসতার বিষয়টিও এখন অনেকটাই স্পষ্ট। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মামুনুলের ফোনটি উদ্ধারের পর সেটিকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে মোবাইলের মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন অ্যাপসের চ্যাটিং লিস্ট থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ সংগ্রহের তথ্য মিলেছে।
এদিকে মামুনুল হকের ব্যাংক হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের চিত্র দেখা গেছে। ভারতের বাবরি মসজিদ, কওমি মাদরাসার ছাত্রদের শিক্ষা ও হেফাজতে ইসলামের নাম করে মামুনুল মধ্যপ্রাচ্য থেকে কোটি কোটি টাকা এনেছেন। সেসব টাকা বিভিন্ন উগ্রবাদী নাশকতামূলক কাজে ব্যয় করা হয়। হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও সম্প্রতি বিলুপ্ত হওয়া কমিটির কেন্দ্রীয় অনেক নেতারই রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। রাজনৈতিক উচ্চাভিলাশ থেকেই তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মামুনুল হক লেবাসের আড়ালে এক বড় অপরাধী। এদের মতো মানুষ ধর্মকে সামনে এনে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায় এবং ধর্মকে তাদের হাতিয়ার হিসেবে মানুষের সামনে দাঁড় করায়। আজ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ মামুনুল তার ভেতরের কথাগুলো বের করছে। ফলে দেশেবাসি তাদের মতো উগ্র মৌলবাদীদের সম্পর্কে জানতে পারছে। এখন মামুনুল হক সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব। হেফাজতও তার কমিটি বিলুপ্ত করে দিয়েছে। ফলে মামুনুলের পক্ষে কথা বলার কেউ নেই। আর এই সব চাঞ্চল্যকর তথ্যের পে বোঝাই যাচ্ছে মামুনুল এখন উভয় সংকটে পড়েছে। তার এদিক-ওদিক সব দিকই যাচ্ছে। এখন দেখাই যাক জিজ্ঞাসাবাদ মামুনুল হক আর কি ধরনের তথ্য দেয়।