দেশের সব বিভাগে পর্যায়ক্রমে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
গণভবন থেকে ভার্চুযালি যুক্ত হন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেবা নিশ্চিতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের সুফল পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
তিনি বলেন, চিকিৎসাসেবা যেন তৃণমূল পর্যন্ত নিশ্চিত হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চিকিৎসকদের আরও আন্তরিক হতে হবে।
বিএসএমএমইউ জানায়, নতুন এ হাসপাতালের পথচলার মাধ্যমে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার নির্ভরশীলতা কমবে এবং অন্তত ৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৩ তলাবিশিষ্ট হাসপাতালটির রয়েছে দ্বিতল বেজমেন্ট। ৭৫০ শয্যার হাসপাতালে বিভিন্ন বিভাগে থাকবে ১৪টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, ১০০ শয্যার আইসিইউ। জরুরি বিভাগে থাকবে ১০০ শয্যা, ভিভিআইপি কেবিন ছয়টি, ভিআইপি কেবিন ২২টি এবং ডিল্যাক্স শয্যা থাকবে ২৫টি। সেন্টারভিত্তিক প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে আটটি করে শয্যা। হাসপাতালটিতে থাকবে এক্স-রে, এমআরআই, সিটি-স্ক্যানসহ অত্যাধুনিক সব ডায়াগনস্টিক সুবিধা।
সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে বিশেষজ্ঞসহ ৩০০ চিকিৎসক ও ১ হাজার ২০০ স্বাস্থ্যকর্মীর কাজ করার কথা রয়েছে। ছয়টি বিশেষায়িত সেন্টারের মাধ্যমে চলা এ হাসপাতালে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি দুই বছরের জন্য ৫৬ জন কোরিয়ান কনসালট্যান্ট কাজ করবেন। যারা দেশীয় জনবল আরও দক্ষ করতে ভূমিকা রাখবেন।
এ ছাড়া হাসপাতালটিতে প্রথম পর্যায়ে থাকবে এক্সিডেন্টাল ইমারজেন্সি, অটিজম সেন্টার, ম্যাটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, ইমার্জেন্সি মেডিকেল কেয়ার সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি সেন্টার, কার্ডিও ও সেরিব্রো ভাসকুলার সেন্টার এবং কিডনি সেন্টার।
দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকবে রেসপিরেটরি মেডিসিন সেন্টার, জেনারেল সার্জারি সেন্টার, অপথালমোলজি, ডেন্টিস্ট্রি, ডার্মাটোলজি সেন্টার এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন বা রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার।
এখানে বিশ্বমানের চিকিৎসা বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, রোবোটিক অপারেশন, জিন থেরাপির ব্যবস্থাও থাকবে। এ ছাড়া হাসপাতালের পরিবেশের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য থাকবে সানকেন গার্ডেন, রুফটপ গার্ডেন ও বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব সুযোগ-সুবিধা। থাকবে উন্নত মানের আধুনিক ব্যবস্থাপনার বহির্বিভাগ, ইনফো ডেস্ক এবং ডিজিটাল ইনফরমেশন সেন্টার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।