আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের৷ বলেছেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে সরকার নিরুপায় হয়ে মূল্য বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে সরকার আবারও জ্বালানি মূল্য সমন্বয় করবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে উল্লেখ করে সড়ক তিনি বলেন, যার ফলে ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারেও প্রভাব পড়ে। এতে বিপিসিকে লোকসান গুণতে হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশে জ্বালানি তেলের দাম বেশি হওয়ায় পাচারের আশঙ্কা ছিল। বিশ্ববাজারে মূল্য বাড়ার ফলে ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই ২২ পর্যন্ত বিপিসির লোকসান ছিল প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা, এমন প্রেক্ষাপটেই সরকারকে বাধ্য হয়ে মূল্য সমন্বয় করতে হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন দেশের জ্বালানি তেলের বর্তমান অবস্থান তুলে ধরে বলেন, মিয়ানমারে ডিজেলের লিটার প্রতি মূল্য ১১২ টাকা ৫৬ পয়সা, ভারতে ১১৪ টাকা, শ্রীলঙ্কায় ১১৭ টাকা ৪৯ পয়সা, আরব আমিরাতে ১২২ টাকা ৮০ পয়সা, নেপালে ১২৭ টাকা ৮২ পয়সা, সিঙ্গাপুরে ১৮৯ টাকা ৭৮ পয়সা এবং হংকং-এ ২৬০ টাকা ৭৫ পয়সা। সরকার এর আগেও গত বছরের ৪ নভেম্বর মূল্য সমন্বয় করেছিল। তার আগে ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় ডিজেলের মূল্য কমিয়েছিল। ভবিষ্যতেও বিশ্ববাজারে দাম কমলে অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম কমিয়ে সমন্বয় করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, এ কথা সত্য জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রভাব পড়ে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে। সরকার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রেখে নেতিবাচক প্রভাব নিম্নপর্যায়ে রাখতে সচেষ্ট রয়েছে।
সরকার স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনমান, কৃষি উৎপাদনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন ধরনের সাপোর্ট কর্মসূচির আওতা বাড়ানো বিবেচনায় নিচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে বিশ্ববাজারে শিগগিরই জ্বালানির দাম স্থিতিশীল হতে শুরু করবে, সেটা আমাদের জন্য আশার বার্তা বয়ে আনবে।
মূল্য বৃদ্ধিজনিত কারণে ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া সমন্বয়ে শনিবার বিআরটিএতে পরিবহন মালিক, শ্রমিক সংগঠনসহ অংশীজনদের বৈঠক হয়। এতে মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিআরটিএ চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো সমন্বয়কৃত ভাড়ার অতিরিক্ত দাবি করবে না।
মন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, কোন পরিবহন সমন্বয়কৃত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকার নাকি দানবে পরিণত হয়েছে- মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে এদেশে মানুষ হত্যা, জনগণের সম্পদ নষ্ট করা এবং জীবন্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে বিএনপিই মূর্তিমান দানবে রূপ নিয়েছে। যারা হত্যার রাজনীতিতে হাতেখড়ি দিয়ে রাজনীতি শুরু করে তারাই দানব, তারা দানবের চেয়েও ভয়ঙ্কর। যাদের দুর্নীতির দুর্গন্ধে ভূত পালায়, তারাই সরকারের সব কাজে দুর্নীতির দুর্গন্ধ খুঁজে বেড়ায়।