বিএনপির উদ্দেশে করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো দরকষাকষি করে লাভ নেই।
আজ মঙ্গলবার (১০ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বৈঠকের আগে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপিকে বলব, দর কষাকষি করবেন না। কোনো লাভ নেই, দর কষাকষি করে। সরকার সংবিধান থেকে নড়বে না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবেই সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যেসব কথা বলছে, দর কষাকষির জন্য বলছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন, নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের আর কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনে যদি জনগণ আপনাদের ভোট দেন, নির্বাচিত করে বা আমরা হেরেও যাই, তারপরও এই নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে সব সময় থাকবো। জনগণকে আস্থায় নিয়ে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল নির্বাচন আমরা করব। জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। বিএনপিকে আমরা বলব, এদিক-সেদিন দর কষাকষি না করে, নির্বাচনে আসুন।
বিএনপির নির্বাচনে আসার বিকল্প নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতারা ভালো করেই জানেন, দলের অস্তিত্ব রক্ষায় তাদের নির্বাচনে আসতেই হবে। তাদের হাতে কোনো বিকল্প নেই।
সরকার ৩০০ আসনেই ইভিএম চায় জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দলগতভাবে ৩০০ আসনে ইভিএম চায়। নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তারা যদি না পারে, সেটা ভিন্ন কথা।
আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের পদত্যাগ নয়, সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার কমিশনকে সহায়তা করবে। নির্বাচনে সরকারের কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না। কর্তৃত্ব থাকবে নির্বাচন কমিশনের। সরকারের যে সব ডিপার্টমেন্ট নির্বাচনের বিষয়টা ডিল করবে সবকিছুই তখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যাবে। সরকারের নির্দেশনায় তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও চলবে না। তারাও নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন, ইভিএম তো পরের ব্যাপার, আগে পদত্যাগ। নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। তারপর নির্বাচন।
কাদের বিএনপির উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ইভিএম পরের ব্যাপার কেন? আপত্তি কোথায়? পৃথিবীর বহু দেশে ইভিএমে নির্বাচন হচ্ছে। আপনারা কি নির্বাচনে কারচুপি করতে চান? কারচুপি, জালিয়াতি এড়ানোর জন্যই ইভিএম ব্যবস্থা হচ্ছে। এছাড়া আধুনিক আর কোনো পদ্ধতি নেই, নির্বাচনে কারচুপি-জালিয়াতি ঠেকানোর। এখানে আপত্তি কেন থাকবে? পদত্যাগ কেন করতে হবে? কি কারণে, আমরা কি অন্যায় করলাম? আমরা বলতে চাই জনগণের কথা। দেশের মানুষ ১৩ বছর বিএনপি ও তাদের জোটের হাঁকডাক শুনেছে। কিন্তু পানি ঘোলা করে অবশেষে তারা ডায়লগেও এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন। এবারও সেই একই কথা নতুন করে বলছেন।
বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলের বিষয়ে কাদের বলেন, জনগণের ধারণা ক্ষমতা লিপ্সায় বিএনপির মহাসচিব পলিটিক্যাল হেলোসিনেশনে ভুগছেন। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে হামলার পরিকল্পনা করা, সন্ত্রাস চালানো, গ্রেনেড হামলা, আগুন সন্ত্রাস এসব তাদেরই চর্চা। আওয়ামী লীগ এসব অপচর্চা, অপরাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়।