বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকারের উপস্থিতিতে সম্পাদক ফোরামের উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন এ সময় ফোরামের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন।
বিএনপির সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘সরকার ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি করছে’- এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে করোনার টিকা চলে এসেছে এবং এটি উপহার হিসেবে ভারত সরকার আমাদের দিয়েছে। এজন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আর এ সময় বিএনপির বক্তব্য তাদের যে মানসিকতা তুলে ধরে, তা হলো—অপছন্দের প্রতিবেশীর কোনও ভালোই দেখতে না পারা এবং সবসময় অমঙ্গল কামনা করা।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি আশা করেছিল সরকার এই করোনা মহামারি সামাল দিতে পারবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দক্ষতায় সেটি সামাল দিয়েছেন এবং বিশ্বব্যাপী তার এই নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার টিকা যথাসময়ে প্রধানমন্ত্রী আনতে পেরেছেন। এটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যারা ফ্রন্টলাইন ফাইটার তাদের প্রথম দেওয়া হবে। বিএনপি এখানে লুটপাট কেন দেখতে পাচ্ছে, সেটি আমি জানি না।’ যারা সবসময় লুটপাটের কথা চিন্তা করে, তারা হয়তো এভাবে চিন্তা করতে ও বলতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আসলে মূল কথা হচ্ছে সরকারের এই সাফল্যে তারা উদভ্রান্ত হয়ে গেছে। এ জন্য তাদের মুখে উদভ্রান্তের মতো প্রলাপ।’
সম্পাদক ফোরাম এ সময় ই-টেন্ডারিংয়ের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞাপনসহ সব সরকারি বিজ্ঞাপন জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দুটি এবং জাতীয় পর্যায়ে ৬টি বাংলা ও ২টি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশের ব্যবস্থা, নামসর্বস্ব ও অনিয়মিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদান বন্ধ ও তাদের মিডিয়া তালিকাভুক্তি বাতিলের দাবি জানায়। ডিএফপি’র তালিকা অনুসারে ক্রোড়পত্র প্রদান ও যেসব জাতীয় দৈনিক ঢাকার দুই সংবাদপত্র হকার্স সমিতিতে বিতরণ ও বিক্রির জন্য দেওয়া হয়, সেগুলো ছাড়া অন্য পত্রিকায় সরকারের বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদান বন্ধ করারও দাবি জানান তারা। সেই সঙ্গে সংবাদপত্রের প্রচার সংখ্যা নির্ধারণ ব্যবস্থা সংশোধন ও একটি কমিটির তদারকির মাধ্যমে করা, সরকারি বিজ্ঞাপনের বিল তিন মাসের মধ্যে পরিশোধের ব্যবস্থা, দীর্ঘ বকেয়া বিল পরিশোধের উদ্যোগ, বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপনা বিকেন্দ্রীকরণ ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে সম্পাদক ফোরামের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উত্থাপন করেন তারা।
এছাড়া, সম্পাদকের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক ও ১৫ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতার সনদ যাচাই করে পত্রিকার ডিক্লারেশন দেওয়া ও পত্রিকার সম্পাদক বা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদককে পূর্ণকালীন সাংবাদিক থাকা ও পত্রিকার প্রকৃত সার্কুলেশন যাচাই করে মিডিয়া তালিকাভুক্ত করার দাবি তুলে ধরে ফোরাম।
তথ্যমন্ত্রী এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত সনদ ছাড়াও অনেক স্বশিক্ষিত প্রতিভাবান সাংবাদিক দেশে রয়েছেন, যাদের সম্পাদক হওয়ার যোগ্যতাও রয়েছে, যা বিবেচনাযোগ্য।’ অন্যান্য দাবি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের সদস্যদের মধ্যে ফারুক আহমেদ তালুকদার, রিমন মাহফুজ, দুলাল আহমদ চৌধুরী, মফিজুর রহমান খান বাবু, কাজী নাছির উদ্দিন বাবুল, মীর মনিরুজ্জামান, এস.এম. মাহবুবুর রহমান, নাজমুল আলম তৌফিক, মাহমুদ আনোয়ার হোসেন, মো. আশ্রাফ আলী, নাসিমা খান মন্টি, আহসান উল্লাহ, কে. এম. বেলায়েত হোসেন, ড. এনায়েত কাসিম, শরিফ শাহাবুদ্দিন ও আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া সভায় প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশ নেন।