মুহাম্মদ ওয়াহিদুন নবী বিপ্লব: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে করা মামলায় দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে মাহমুদুর রহমান আত্মসমর্পণ করে আপিলের শর্তে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসঙ্গে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এরপর বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে তাকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নুর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাংবাদিক শফিক রেহমান ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহপাঁচজনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। কারাদন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া। রায়ে আসামিদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩৬৫/১২০ বি ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড তদুপরি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। এছাড়া পেনাল কোডের ১২৪/১২০ ধারায় প্রত্যেককে দুই বছর করে সশ্রম কারাদন্ড তদুপরি তদুপরি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। অপরাধ ঘটানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় রিজভী আহাম্মদকে। এ অভিযোগে ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলায় ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।