নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বেলাল হোসেন ওরফে পাঙ্কা বেলালকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। জেলার ৪ নম্বর নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এস এম মোসলেহ্ উদ্দিন মিজান সোমবার এ আদেশ দেন।
জেলা জজ আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, সোমবার বেলা ১২টার দিকে বেলাল হোসেনকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রোববার দুপুরে বসুরহাট পৌর সভার হাসপাতাল সড়ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেলালকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। বেলাল চর ফকিরা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইব্রাহিমের ছেলে। চাঞ্চল্যকার এ মামলায় এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার করা হল।
বেলালের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি; তবে বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল উভয়ের সঙ্গে বেলালের কয়েকটি ছবি পাওয়া গেছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশির হাট পূর্ব বাজারে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌর সভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় পেশাগত দায়িত্বপালনকালে গুলিবিদ্ধ হন দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল বার্তা বাজারের স্থানীয় প্রতিনিধি বোরহান উদ্দিন মুজ্জাকির। পরদিন রাত পৌনে ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বোরহানের বাবা চর ফকিরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হুদা ওরফে নোয়াব আলী মাস্টার বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের নামে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলাটি পিবিঅইতে হস্তান্তর করা হয়।
মামলার তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআই একাধিক বার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় লোকজনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সহ অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা গত মাসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচন সামনে রেখে আলোচনায় আসেন। কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভায় মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা বক্তব্য দেন তিনি।