যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এজেন্ডাভিত্তিক একের পর এক খবর প্রচার হতে থাকে। যুদ্ধাপরাধীদল জামায়াতের কোনো নেতার ফাঁসির দণ্ড হলেই সেটা প্রচার হতো বিরোধী দলীয় ধর্মীয় নেতা হিসেবে। অভিযোগ রয়েছে, জামায়াতের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা খেয়ে বিতর্কিত খবর প্রচার করা হতো। আর বাংলাদেশ নিয়ে এসব বিতর্কিত খবর প্রচারের পেছনে একটি নাম দৃশ্যপটে আসে আর সেটি হলো ডেভিড বার্গম্যান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রশ্নবিদ্ধ করতে একেরপর এক বিতর্কিত লেখালেখিই ছিল ডেভিড বার্গম্যানের কাজ। মূলত যখন সাকা চৌধুরী যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেফতার হয় তখন থেকেই পক্ষপাতমূলক ব্লগ লেখা শুরু হয়। সাকা চৌধুরীকে বাঁচানো জন্য এবং তার মৃত্যুদন্ডের রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ করা জন্য পদে পদে ডেভিড বার্গম্যান চেষ্টা করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপমন্তব্য করাসহ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্ম দেয় এই বার্গম্যান। মূলত ডেভিড বার্গম্যানকে সাকার অনুসারী এবং তার পেইড এজেন্ট বলা হতো।
অভিযোগ রয়েছে, জামায়াতের লবিষ্ট হিসেবে ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কাজ করে গেছে ডেভিড বার্গম্যান। মূলত বার্গম্যানই আল জাজিরার সঙ্গে গাটছড়া বেঁধে যুদ্ধাপরাধের বিচারকাজ প্রশ্নবিদ্ধ করে আসছিলো। দেশে বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করতে আবারও নতুন এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে বার্গম্যান। যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরীর প্রোডাক্ট বলা হয়ে থাকে কথিত সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে। মূলত সাকা চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক থেকেই তারেক রহমানের সঙ্গে বার্গম্যানের সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। তখন থেকে তারেকের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করে চলেছে ডেভিড বার্গম্যান। মূলত তার কাজই হলো তারেকের কথায় প্রধানমন্ত্রীর কার্মকান্ড নিয়ে সমালোচনা। সেই ধারাবাহিকতারই একটি অংশ মাত্র `অল দ্যা প্রাইম মিনিষ্টারস ম্যান` প্রামাণ্য চিত্রটি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডেভিড বার্গম্যান নিজেকে মানবাধিকার কর্মী এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেয়। সে আগে কাজ করতাে চ্যানেল ফোরে। মূলত চ্যানেল ফোরে কাজ করার সময়ই তার পরিচয় হয় ড. কামাল হোসেনের মেয়ে সারা হোসেনের সঙ্গে। পরে তাদের বিয়ে হয়। একটি রিপোর্ট করাকে কেন্দ্র করে ডেভিড বার্গম্যানের দুর্নীতির প্রমাণ পায় চ্যানেল ফোর। এরপরই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে সে বাংলাদেশের নিউ এজ পত্রিকাতে কাজ করেন। বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার পর থেকে ডেভিড বার্গম্যান নিজেকে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক পরিচয় দিয়ে থাকে।
মূলত ডেভিড বার্গম্যানের বৈধ পথে কোনো আয় রোজগার নেই। ফলে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের নামে বিষোদগার করার জন্যই তারেকের কাছ থেকে সে মোটা অংকের টাকা পেয়ে থাকে। তারেকের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে লন্ডনে বার্গম্যানদের টীম কাজ করছে। ডেভিড বার্গম্যানকে তারেকের উপদেষ্টাও বলা হয়ে থাকে। সাধারণত নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা তৈরি করাই তার প্রধান কাজ। আর এই কাজের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছে যুদ্ধাপরীদের সন্তানরা। মূলত ওই টাকাগুলো বিতরণ করা তারেকের কাজ। তারা ডেভিড বার্গম্যান, বিতর্কিত নেত্র নিউজের তাসনিম খলিলের সহযোগীতায় এই প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। আর তাদের পরিচালনা করছে তারেক।
যুদ্ধাপরাধীদের এজেন্ট এবং তারেক রহমানের বেতনভুক্ত উপদেষ্টা ডেভিড বার্গম্যান সেই লোক, যিনি প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সাংবাদিকতা করেন এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করাই যার মূল লক্ষ্য। বার্গম্যান প্রবাসে থাকা কিছু দেশবিরোধী ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন, যারা বিএনপি-জামায়াতের আরো ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে কাজ চালাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি নিয়মিত বানোয়াট সংবাদ তৈরি করে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে অপপ্রচার চালানো।
সম্প্রতি এই চক্রটি ফেসবুক এবং ইউটিউবেও লাইভ বক্তব্য দিয়ে এবং ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। মানুষের আরো কাছে পৌঁছার জন্য এদের প্রচেষ্টা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। অর্থপাচার এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই ডেভিড বার্গম্যানের সহযোগীতায় দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসে হাত মিলিয়েছে এবং অসাংবিধানিকভাবে সরকার পরিবর্তনের জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটের হয়ে কাজ করছেন।
ডেভিড বার্গম্যানই তারেক রহমান, এস কে সিনহার মধ্যে লিয়াজোঁ হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু এই বিভিন্ন অপচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর, এখন তারা ভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন পাবলিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, দেশের প্রধানমন্ত্রী, তার পরিবার ও নিরাপত্তা বাহিনীকে নিয়ে মিথ্যা-বানোয়াট গুজব ছড়াচ্ছে। এই কাজগুলো দূরভিসন্ধিমূলক। ‘অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান’ প্রতিবেদনটি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করে যে দেশের বাইরে, বিশেষ করে লন্ডনে যে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র চলছে সেই ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ এটি।
সূত্র : বাংলা ইনসাইডার