রানে ফেরার বার্তাটা আগের ম্যাচেই দিয়েছিলেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে পঞ্চাশ পেরোতে পারেননি তিনি। ধারাবাহিকত ধরে রেখে আজ (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ঝড় তুললেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার, হাঁকালেন আসরে নিজের প্রথম ফিফটি।
তবু দলীয় সংগ্রহটা বড় হয়নি বরিশালের। নির্ধারিত ২০ ওভারের ৫ বল আগেই ১৪৯ রানে অলআউট হয়ে গেছে ফরচুন বরিশাল। তাদেরকে অল্পেই আটকে রাখার মূল কারিগর এবারের বিপিএলের হ্যাটট্রিকম্যান মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী নিপুণ। যিনি আজ ২ ওভার বোলিং করে সাকিবসহ নিয়েছেন ৪টি উইকেট।
মৃত্যুঞ্জয়ের তোপেই মূলত শেষের ১৯ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বরিশাল। যে কারণে সাকিবের ৩১ বলে ৫০ রানের পরেও দেড়শ রান করতে পারেনি দলটি। মাঠের বাইরের নানান নাটকীয়তা ঝেড়ে মুছে জয়ে ফিরতে চট্টগ্রামকে করতে হবে ১৫০ রান। মৃত্যুঞ্জয়ের ৪ উইকেটের পাশাপাশি শরিফুল নিয়েছেন ২ উইকেট।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বরিশাল। আজ ক্রিস গেইলের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করতে পাঠানো হয় বিপিএলে অভিষিক্ত মুনিম শাহরিয়াকে। কিন্তু ইনিংসের তৃতীয় বলেই সাজঘরে ফিরে যান মুনিম। অপরপ্রান্তে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন গেইল। তবে তা বড় হয়নি।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর সপ্তম ওভারেই আউট হয়ে যান ইউনিভার্স বস। ফেরত যাওয়ার আগে ১ চারের সঙ্গে তিনটি বিশাল ছয় হাঁকান গেইল। উইল জ্যাকসের বলে লং অন বাউন্ডারিতে দুর্দান্ত এক ক্যাচে গেইলের বিদায়ঘণ্টা বাজান মেহেদি হাসান মিরাজ। এরপর ৩.৪ ওভারে ৩১ রান যোগ করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
ইনিংসের ১১তম ওভারে শান্তর আউট নিয়ে দেখা দেয় ঝামেলা। আফিফ হোসেনের বলে কাট করতে গিয়ে ব্যর্থ হন শান্ত, বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক আকবর আলির গ্লাভসে। জোরালো আবেদন করে চট্টগ্রামের ফিল্ডাররা। আউট দেননি মাঠের আম্পায়ার, চট্টগ্রাম নেয় এডিআরএস। টিভি রিপ্লে দেখে আওয়াজের ওপর নির্ভর করে আউটের সিদ্ধান্ত জানান থার্ড আম্পায়ার।
তবে থার্ড আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্তে চোখেমুখে দ্বিধার ছাপ ফুটে ওঠে মাঠের আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুলের। এটি মানতে কষ্ট হয় ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর। বেশ কিছুক্ষণ উইকেটের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। অধিনায়ক সাকিবও বুঝতে পারছিলেন না কী বলবেন। পরে আম্পায়ারের মধ্যস্থতায় শুরু হয় খেলা।
এরপরই ঠিক ঝড়টা তোলেন সাকিব। ইনিংসের ১৫তম ওভারে নাসুম আহমেদের বলে পরপর তিনটি ছক্কা হাঁকান তিনি। পরের ওভারেই পূরণ করেন এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম এবং টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটি। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ৪৫ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেলেন তিনি। বিপিএলে ফিফটি করলেন ২০১৯ সালের জানুয়ারির পর।
অবশ্য ফিফটি করে আর বেশিদূর যেতে পারেননি বরিশাল অধিনায়ক। ইনিংসের ১৭তম ওভারে আক্রমণে এসে তৃতীয় বলেই সাকিবের মূল্যবান উইকেটটি নেন মৃত্যুঞ্জয়। আউট হওয়ার আগে তিনটি করে চার ও ছয়ের মারে ৫০ রান করেন সাকিব। নিজের পরের ওভারে চার বলের ব্যবধানে নুরুল হাসান সোহান, ইরফান শুক্কুর ও মুজিব উর রহমানকে ফেরান মৃত্যুঞ্জয়।
শেষ ওভারের প্রথম বলে সরাসরি থ্রোয়ে শফিকুল ইসলামকে রানআউট করে বরিশালের ইনিংস গুটিয়ে দেন শরিফুল। এ বাঁহাতি পেসার ২.১ ওভারে ৯ রানে নেন ২টি উইকেট। মৃত্যুঞ্জয়ের ৪ উইকেটে খরচ হয়েছে ১২ রান। এছাড়া উইল জ্যাকস, বেনি হাওয়েল ও আফিফ হোসেনের শিকার ১টি করে উইকেট।