পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা অংশে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন এক মৌয়াল। বাঘের কামড়ে ও থাবায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর কাঁধ ও হাত।
২৫ বছর বয়সী ওই মৌয়ালের নাম রবিউল শেখ। বাঘের মুখ থেকে রবিউলকে ছাড়িয়ে আনেন তাঁর বাবা মো. হালিম শেখ (৫৫)।
গত মঙ্গলবার সুন্দরবনের গভীরে মৌয়ালদের একটি দল মধু সংগ্রহের জন্য গেলে এ ঘটনা ঘটে। এরপর আহত রবিউলকে সারা রাত নৌকা বেয়ে ও পরে কোস্টগার্ডের স্পিডবোটে করে বুধবার সকালে চিকিৎসকের কাছে আনা হয়।
মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা একটি খালের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান রবিউল। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারেননি রবিউল শেখ।
বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে ফেরার পর তাঁদের দেখতে যান সেখানকার মধু গবেষক সৈয়দ মোহাম্মদ মঈনুল আনোয়ার। খোঁজ নেন পুরো ঘটনার। তিনি বলেন, হঠাৎ করে বাঘ আক্রমণ করে। দলের অন্য সদস্যরা তখন হতবিহ্বল হয়ে যান।
মঈনুল আনোয়ার বলেন, বাঘ ছেলেটার ঘাড়ে কামড়ে দেয়। বাবা হালিম শেখের হাতে লাঠি ও দা ছিল। যখন কামড় দিয়েছে, তখন হালিম শেখ বাঘকে আঘাত করেছেন। তবু বাঘ ছাড়েনি। প্রথমে বাঘের পেছনের পায়ে, পরে সামনের পায়ে আঘাত করেন হালিম শেখ। আঘাতের একপর্যায়ে বাঘ সামনের পা দিয়ে থাবা দেয়। রবিউলের বাঁ হাতে লাগে। হাতটা চার ইঞ্চির মতো লম্বা হয়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে।
মধু গবেষক মঈনুল আনোয়ার বলেন, বাবা খুব সাহসী ছিলেন। ক্রমাগত আঘাত করেন তিনি। একসময় বাঘ ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।
বাঘের আক্রমণে আহত রবিউলকে কোলে করে নৌকা পর্যন্ত নিয়ে আসেন তাঁর বাবা। দলের বাকি সদস্যরা সারা রাত নৌকা চালিয়ে ও পরে কোস্টগার্ডের স্পিডবোটে করে তাঁকে নিয়ে আসেন সুন্দরবনের সীমান্তবর্তী ছোট ভ্যাটখালী নামক এক জায়গায়, চিকিৎসক সোলায়মানের কাছে। তিনি মূলত বাঘ ও কুমিরের আক্রমণে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা করছেন দীর্ঘদিন ধরে।
মধু গবেষক মঈনুল আনোয়ার বলেন, রবিউলের হাতে চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। ঘাড়ে ওষুধ দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়েছে।