1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ অপরাহ্ন

সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের জামিন নামঞ্জুর

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৬ বার দেখা হয়েছে

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার সকালে সুনামগঞ্জ দ্রুত বিচার আদালতে মান্নানের পক্ষের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। পরে পক্ষে-বিপক্ষের আইনজীবীদের ১০ মিনিট যুক্তি-তর্ক শেষে বিচারক নির্জন মিত্র তার জামিন না মঞ্জুর করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মাশুক আলম বলেন, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রীর হুকুমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসহ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাবেক মন্ত্রীর পক্ষের আইনজীবীরা জামিন চাইলে আমরা বিরোধিতা করেছি। তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে সুনামগঞ্জের শতাধিকেরও বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অথচ পুলিশ সাবেক এ মন্ত্রী কোন উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলা চালিয়েছেন তার কারণ জানতে রিমান্ড আবেদন করেনি। বিষয়টি দুঃখজনক। গত ২ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত এক শিক্ষার্থীর ভাই হাফিজ আলী বাদী হয়ে সাবেক মন্ত্রী ৯৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জের বাড়ি থেকে জেলা পুলিশ সাবেক এ মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে।
সাবেক মন্ত্রী মান্নান : পক্ষে-বিপক্ষে জনতার অবস্থান, শান্তিগঞ্জ অশান্ত সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের গ্রেফতার ঘিরে তার নিজ এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে। ইতোমধ্যে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে শান্তিগঞ্জে দু’দফা সড়ক অবরোধ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একইভাবে তার দৃষ্টান্তমুলক শান্তি চেয়ে মানববন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আরেক অংশ। অনেকটা পক্ষে ও বিপক্ষে অশান্ত পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায়। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে শান্তিগঞ্জ এলাকায় সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের পাশে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে সড়কে অবস্থা নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সেখানে আসে শান্তিগঞ্জ টেক্সটাইল ইনিস্টিটিউট, আবদুল মজিদ কলেজ, হাজী আকরাম উল্লাহ দাখিল মাদ্রাসা ও জয়কলস উজানীগাঁও সরকারি রসিদিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা সেখানে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, এম এ মান্নান অবহেলিত সুনামগঞ্জে উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচন করেছেন। তাঁর চেষ্টায় সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইনিস্টিটিউট, শিল্প ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আজিজুননেসা ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউটসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়েছে। সুনামগঞ্জের উন্নয়নে তিনি সব সময় আন্তরিক ছিলেন। অপরদিকে রোববার উপজেলার পাগলা বাজারে তার দৃষ্টান্তমুলক শান্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আরেক অংশ। মান্নানের বিরুদ্ধে গত সরকারের মেগা প্রকল্পে জেলা শহরকে বঞ্চিত করে তার নিজ এলাকায় প্রধান্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে জেলাজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তার নাম ব্যবহার করে তার একান্ত রাজনৈতিক সচিব ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক হাসনাত হোসাইন ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুর হোসেন বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপ্রব্যবহার করেছেন। এছাড়াও মান্নানের স্ত্রী জুলেখা মান্নান আয়-বহির্ভূত স¤পদ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রধানের নিদের্শনা না মেনে ছেলে সাদাত মান্নাকে চেয়ারম্যান প্রার্থী করায় দলের ভেতরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন মান্নান। এমনকি তার নির্বাচনী এলাকা জগন্নাথপুরকে ‘মাইনাস’ করে এককভাবে শান্তিগঞ্জ উন্নয়ন কাজ করা নিয়েও রয়েছে বিস্তর সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে জগন্নাথপুরের বাসিন্দা কবি আবু আসাদ চৌধুরী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ভাটির দরবেশ এম এ মান্নান ওরফে এমনে মান্নান বিগত তিন মেয়াদে সুনামগঞ্জ-৩ এর এমপি ছিলেন, একবার প্রতিমন্ত্রী এবং একবার পূর্ণ মন্ত্রীও ছিলেন, কিন্তু উনার নির্বাচনি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ বৃহত্তর জগন্নাথপুরে জনগণের কল্যানে উনার কার্যকরী কোনো কাজ নাই। আমাদের জগন্নাথপুরকে উনি বরাবরই একপেশে করে রেখেছেন। দুর্নীতির সুবিধার্থে উন্নয়নের নামে শান্তিগঞ্জকে বেচে নিয়েছিলেন। উনার আমলের শুরু থেকে দীর্ঘদিন জগন্নাথপুর সিলেট সড়কের জন্য যে দুর্গতি আমাদেরকে পুহাতে হয়েছে তা ভুলারমতো নয়, শেষ দিকে নামমাত্র কাজ হয়েছে যদিও এখন প্রায় অধিকাংশই ভেঙে যাচ্ছে! মান্নান সরকারের যুগ্ম সচিব হিসেবে চাকরি জীবন শেষ করে যোগ দেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। সুনামগঞ্জ-৩ আসনে ২০০৮ সাল থেকে পরপর চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী পরে ২০১৮ সালে পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি। এছাড়াও তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। প্রসঙ্গত- সুনামগঞ্জ পৌর শহরে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী জহুর আহমদের ভাই দোয়ারাবাজার উপজেলা বাসিন্দা হাফিহ আহমদ ২ সেপ্টেম্বর সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেন। এই মামলায় মান্নানসহ ৯৯ জনকে আসামি করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি