গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের অনুরোধ ও চাহিদা উপেক্ষিত হলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিজেদের দায়িত্ব পালনে আবশ্যক সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে না। এছাড়া ইসিকে সহায়তা করা নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সাংবিধানিক দায়িত্ব।আইন মন্ত্রণালয় আরপিও সংশোধনে ইসির প্রস্তাবের ওপর কোনো সাড়া না দেওয়ায় তাদের কাছে শেষবারের মতো এমন চিঠি দিয়েছে এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম খান আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবের কাছে এমন চিঠি পাঠিয়েছেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে আরপিওর কিছু সংশোধন/সংযোজনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় সংশোধন সংক্রান্ত খসড়া বিল তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত ৮ আগস্ট লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও খসড়া বিলের বিষয়ে নেওয়া ব্যবস্থা বা অগ্রগতি সম্পর্কে না জানানো হয়নি। এ অবস্থায় গত ২৮ লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগকে জরুরি চিঠি দিয়ে অগ্রগতির বিষয়ে ইসিকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। তারপরও এ বিষয়ে ইসিকে কিছু না জানানোয় গত ১০ অক্টোবর ফের চিঠি দিয়ে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। তা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে ইসিকে কিছু জানায়নি তারা।
চিঠিতে আরও বলা হয়, দায়িত্ব পালনে ইসিকে সহায়তা করা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদের বিধান মতে সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। আরপিও-এর ৫ (২) অনুচ্ছেদেও দায়িত্ব পালনে ইসিকে সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে সুষ্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে তিন মাসের বেশি অতিবাহিত হওয়া এবং বারংবার চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা সত্বেও লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ উল্লিখিত বিলের বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থা বা সাধিত অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো তথ্য এ পর্যন্ত ইসিকে জানায়নি।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ রাষ্ট্র এবং সরকারের নির্বাহী বিভাগের একাংশ। দায়িত্ব পালনে ইসিকে সহায়তা করা তাদের সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব। ইসি মনে করে সংবিধান ও আইনের সুষ্পষ্ট বিধানের ব্যত্যয়ে কমিশনের যাচিত অনুরোধ ও চাহিদা উপেক্ষিত হলে কমিশন স্বীয় দায়িত্ব পালনে আবশ্যক সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে না।
এছাড়া এতে নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের সক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে জনমনে অনাকাঙ্খিত সংশয়ের দেখা দিতে পারে।
এ অবস্থায় আরপিও সংশোধন সংক্রান্ত খসড়া বিলের অগ্রগতির বিষয়ে ইসিকে আগামী ১৫ ডিসেম্বর মধ্যে জানানোর জন্য শেষবারের মতো বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।