সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতাঃ
সীতাকুণ্ডে (শুক্রবার ) ৮ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত তিন দিন ব্যাপি প্রধান ঐতিহ্যবাহী সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৩/১৪ লাখ মানুষের সমাগমের মাধ্যমে প্রধান ধর্মীয় উৎসব শিব চতুর্দশী মেলা শুরু হয়েছে।
জানা যায়,কলিযুগের সবচেয়ে বড় ও প্রধান ঐতিহ্যবাহী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবে চন্দ্রনাথ ধামে আগত পূর্ণ্যার্থীদের পূঁজা পালনের মধ্যে দিয়ে ৩ দিন ব্যাপি শিব চতুর্দশী মেলা শুরু হয়।এ মেলায় দেশ বিদেশ তথা ভারত, বার্মা,নেপালসহ নিজ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লক্ষ লক্ষ নারী পুরুষ পূর্ণ্যার্থী পূণ্য লাভের আশায় তীর্থ দর্শন করতে এখানে আসে।মেলায় আসা তীর্থ যাত্রীদের নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্গলা রক্ষা করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্হা নেয়া হয় বলে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সভাপতি ও স্রাইন কমিটির সহ-সাধারণ সুব্রত চক্রবর্তী সৌমিত্র জানান।প্রতি বছর এ মেলাকে ঘিরে ভক্তদের আগমনে সীতাকুণ্ড পৌরসদর থেকে শুরু করে চন্দ্রনাথ ধাম পর্যন্ত মিলন মেলায় পরিণত হয়।তীর্থ যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্হা সমূহ মেলা চলাকালীন সময় সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকবে।এতে আইন শৃঙ্গলা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রায় ৫২২ জন পুলিশেরর অফিসার ও সদস্য কাজ করবে।মেলাতে আসা পূর্ণার্থীরা যাতে সর্বনাশ হয় এমন ধরনের কোন জুয়া বা চাঁদাবাজি চলতে দেয়া হবে না বলে পুলিশ বাহিনী সূত্রে জানা যায়।তাছাড়া প্রচলিত প্রথা আছে একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ পৃথিবীর সব তীর্থস্হান দর্শন করলেও অন্তত একবার যদি সীতাকুণ্ডেরর তীর্থস্হান দর্শন না করে,তাহলে তার তীর্থ দর্শন সম্পূর্ণ হয় না।তাই প্রতিটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ইচ্ছা থাকে জীবণে অন্তত একবার হলেও এই মহাতীর্থ দর্শনের।ফলে এখানে শতাধিক বিভিন্ন মঠ মন্দির দর্শন করতে পারবে আগত তীর্থ যাত্রীরা।শিব চতুর্দশীতে প্রায় ১৩/১৪ লাখ পূর্ণার্থীদের আগমন ঘটবে বলে সচেতন মহলের ধারনা।কারণ এবার মেলায় ও পূঁজা করতে চন্দ্রনাথ ধামকে ঝাঁকজমক ভাবে লাইটিং করা হয়।উপরে উঠার জন্য সিড়ি গুলোকে সংস্কারও সিড়িতে উঠার আগের রাস্তা প্রশস্ত করা হয়।পূর্ণার্থীদের নিরাপত্তায় প্রায় দুইশত পুলিশ রাখা হয়।আর এদের তত্ত্বাবধানে সার্বক্ষণিক নজদারীতে দায়িত্বে থাকবে পিপিএম সাহসিকতা ও আইজিপি পদকপ্রাপ্ত মোঃ কামাল উদ্দিন এবং অতিঃ পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড সার্কেল) এবিএম রায়হানুল বারী।তিনি মেলা আইন শৃঙ্গলা কমিটির সভায় স্হানীয় সাংসদের উপস্হিতিতে স্পষ্ট বলেছেন কাউকে মেলায় চাঁদাবাজি করতে দেবে না।কেউ করলে তাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলে ঘোষনা দেন।তিনি মেলাতে কিশোর গ্যাংকে কঠোর হস্তে দমন করবেন।এদিকে সেচ্ছা সেবক টিম সার্বক্ষণিক টহল দিবে।চন্দ্রনাথ ধাম এলাকার পুরো তীর্থ জুড়ে সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকবে।তিন ব্যাপি শিব চতুর্দশী মেলার সমাপ্তির অন্তত ১৫ দিন পর শুরু হবে দোল পূর্ণিমা মেলাও।শিব চতুর্দশী মেলায় হিন্দু সম্প্রদায় এর ৩ দিন ব্যাপি পূঁজা শেষে ১৫ দিন পর্যন্ত মুসলিম,বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টানসহ সব সম্প্রদায়ের আগমনও ঘটবে।কারণ তারা আসবে দূরদূরান্ত থেকে আগত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আনা ভাল মানের বিভিন্ন পণ্য কেনার জন্য।আর এ পণ্য গুলো অনেক সস্তায় কেনা যায়। তখন আরো উপচে পড়া মানুষের ভিড় জমে উঠবে।তখন মনে হবে এ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুন্দর একটি উদাহরণ।মেলা উপলক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন,শিব চতুর্দশী মেলাকে সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য ডিসি আবুল ফয়েজ মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান স্যারের নির্দেশনায় ২ জন এক্সিকিউটিভ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে।পূণ্যার্থীদের সুবিধার্থে পানির সু-ব্যবস্হা, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্হাপন এবং বিশ্রামাগারসহ মহিলাদের জন্য স্নানাগারের ব্যবস্হা গ্রহন করা হয়।আশা করি মেলাটি সুন্দর ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবে।