সুনামগঞ্জে বেসরকারী জেনারেল হাসপাতালে ডাঃ এনামুল হকের ভূল এন্ট্রিবায়োটিক প্রয়োগের ফলে ৫দিনের এক নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সকালে চিকিৎসকের ভূল এন্ট্রিবায়োটিক প্রয়োগের ফলে শিশুটি মারা যায়। নিহত শিশুটি শহরের নতুন পাড়াস্থ লিটন দেবের সন্তান। গত ৯ জুন সুনামগঞ্জের নতুনপাড়াস্থ লিটন দেবের গর্ভবর্তী স্ত্রী জ্যোতি রানী দেবকে শহরের কাজির পয়েন্টস্থ বেসরকারী জেনারেল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ২০৩ নম্বর কেবিনে ভর্তি করানো হয়। ঐদিন সিজারের মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় জ্যোতি রানী দেব এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। শিশুটি ভুমিষ্ট হওয়ার পর গত দুইদিন তার স্বাভাবিক অবস্থা থাকলেও সুনামগঞ্জ জেলা সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ এনামুল হক সরকারী হাসপাতালের পাশাপাশি এই বেসরকারী জেনারেল হাসপাতালেও গত ১১ই জুন থেকে ঐ নবজাতকের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। কিন্ত আজ ভূল এন্ট্রিবায়োটিক প্রয়োগের ফলে শিশুটি মারা গেলে তার স্বজনরা হাসপাতালে এসে নার্সের অফিসে কিছুটা ভাংচুর চালালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ সময় উপস্থিত ছিলেনসুনামগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর চঞ্চল কুমার লৌহ, সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এস আই রুপক বাবু,নিহত শিশুর জেটু রিপন দেব,ব্যবসায়ী মো. ফারুক আহমদ,নুর জালাল মন্টি প্রমুখ। এছাড়াও এই ডাঃ এনামুল হক জেলা সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট হয়েও হাসপাতালের গেইটের সামনে একটি ফার্মেসীতে নিজস্ব চেম্বার খুলে রোগী দেখছেন অন্যদিকে হাসপাতালে ভর্তিকৃত শিশুরা টিকমতো চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অবিযোগের যেন শেষ নেই।
এ ব্যাপারে নিহত শিশুটির জেটু(চাচা) রিপন দেব জানান,আমার ভাতিজা গত দুইদিন স্বাভাবিক ছিল কিন্তু ডাঃ এনামুল হকে ভূল এন্ট্রিবায়োটিক প্রয়োগের ফলে শিশুটি মারা যায়। এভাবে শহরের আরো কয়েকজন শিশু এনামুল হকের ভূল চিকিৎসায় মারা গেছেন বলে দাবী করেন। তিনি ডাঃ এনামুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
এ ব্যাপারে তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা নুর জালাল মন্টি বলেন,তার একজন শিশু স্বজনকে নিয়ে এই জেনারেল হাসপাতালে আসলে এই ডাঃ এনামুল হকের ভূল ইনজেকশনের কারণে শিশুটি মুত্যুর মুখে পতিত হলে শেষ পর্যন্ত অন্য আরেকজন ডাক্তারের পরামর্শে অক্রিজেন দিয়ে শিশুটিকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর অনেক টাকা খরচ করে শিশুটিকে বাচাতে হয়েছে। তিনি বলেন এই ডাঃ এনামুল হক জেলা সদর হাসপাতালের একজন সরকারী চিকিৎসক কিন্তু তিনি জেনারেল হাসপাতালে এসে রোগীদের ইনজেকশন দিয়ে মেডিসিন দিয়ে আবারো সরকারী হাসপাতালে আসা যাওয়াই উনার কাজ। ফলে তার ভূল চিকিৎসায় ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু মারাও গেছেন বলে তিনি দাবী করেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চঞ্চল কুমার লৌহ জানান,এই ডাঃ এনামুল হকের ভূল চিকিৎসার কারণে শহরের অনেক নবজাতক শিশু মারা গেছেন এবং অনেক শিশুরা অসুস্থ হয়ে পরবর্তীতে সিলেট নিয়ে গিয়ে শিশুর অভিভাবকরা অনেক টাকা পয়সা খরচ করে সুস্থ করতে হয়েছে। ডাঃ এনামুল হকের বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবী জানান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডাঃ এনামুল হকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার চিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন তিনি এখন সিলেটে আছেন তার বাচ্ছা অসুস্থ পরে কথা বলবেন বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ শামস উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।