সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের ইনাতনগর গ্রামে বাড়ির জায়গা-জমির ভাগ-বাটোয়ারা ও সীমানা নির্ধারণের জের ধরে পুলিশ সদস্য নিজাম উদ্দিনকে হত্যার দায়ে তার ভাই ও ভাবিকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে এ রায় দেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক তেহিসন ইফতেখার। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউপির ইনাতনগর গ্রামের মো. জহুর উদ্দিনের ছেলে নিহত পুলিশ সদস্যের আপন ভাই মো. জামাল উদ্দিন ও জামাল উদ্দিনের স্ত্রী মোছা. আছমা বেগম। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী কামাল হোসেন। এর আগে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় গত ৬ এপ্রিল ২০১৮ সালে নিহত পুলিশ সদস্যের স্ত্রী মোছা. রুজিনা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল ছুটি ভোগ করার জন্য পুলিশ সদস্য নিজাম উদ্দিন তার সদর উপজেলার গৌরারং ইউপির ইনাতনগরস্থ বাড়িতে আসেন। বাড়িতে আসার পর বাড়ির জায়গা জমির ভাগবাটোয়ারা ও সীমানা নির্ধারণের জের ধরে তাকে তার বড়ভাই জামাল উদ্দিনসহ তার সহযোগীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল সকালে তাদের বাড়ির উঠানে লোহার রড, শাবল, লাঠি ও ক্রিকেট ব্যাট হাতে নিয়ে উপর্যুপরি মারধর করে। পরে চিৎকার শুনে পুলিশ সদস্য নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী দৌড়ে এসে দেখতে পান ঘটনাস্থলে জামাল উদ্দিন লোহার রড দিয়ে তার স্বামীর মাথায় আঘাত করছেন। এ সময় তাকে বাধা দিলেও নিজাম উদ্দিনের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য জামাল উদ্দিন লোহার রড দিয়া পুনরায় তার মাথায় ও মুখে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন। একই সাথে বিবাদী অলিউর রহমান হাতে থাকা কাঠের ক্রিকেট ব্যাট দিয়া এবং বিবাদী আছমা বেগম লাঠি দিয়া নিজাম উদ্দিনকে এলোপাতাড়িভাবে মাথায় ও শরীরে আঘাত করে। বিবাদী সাজেদা আক্তার ও আবেদা আক্তারদ্বয় বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়কভাবে তার নিজাম উদ্দিনকে আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যের স্ত্রী তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে লোকজন এসে তার স্বামীকে মূমূর্ষু অবস্থায় বিবাদীদের কবল হতে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিনকে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরে সিলেট সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টার সময় জখম জনিত কারণে পুলিশ সদস্য নিজাম উদ্দিনের মৃত্যু হয়। পরে বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করে আসামি জামাল উদ্দিন ও মোছা. আছমা বেগম-এর বিরুদ্ধে পেনাল কোড ১৮৬০-এর ১৪৩/৪৪৭/৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।