সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসইতে) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে চারশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও দুই বাজারেই দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। অবশ্য দুই বাজারেই দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি রয়েছে।
এর আগে নতুন বছর ২০২৩ সালের প্রথমদিন রোববার সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়। সেই সঙ্গে ডিএসইতে দুইশ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়। বছরের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও সবকটি সূচকের পতন হয়। আর লেনদেন কমে দেড়শ কোটি টাকার নিচে নেমে আসে। এতে ২০২০ সালের ৭ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটে।
বছরের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার এসে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক ও লেনদেন উভয় বাড়ে। তবে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ দুইশ কোটি টাকার নিচেই থাকে। পরের কার্যদিবস বুধবারও মূল্যসূচক ও লেনদেন বাড়ে। তবে লেনদেন তিনশ কোটি টাকার ঘর স্পর্শ করতে পারেনি।
আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন তিনশ কোটি টাকার ঘরে গেলেও পতন হয় মূল্যসূচকের। ফলে বছরের প্রথম সপ্তাহ হতাশা দিয়েই পার করতে হয় শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীদের।
বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসও বিনিয়োগকারীরা হতাশ হন। মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমে লেনদেনের পরিমাণ। তবে দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে তিনশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে মূল্যসূচকে ছিল মিশ্র প্রবণতা।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার লেনদেন শুরুর দিকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমলেও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে। তবে লেনদেনের সারাক্ষণ দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় থাকে বেশি প্রতিষ্ঠান।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৬৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৬টির। আর ১৭৪টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এরপরও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৬২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৩৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১২৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ১৯ ডিসেম্বরের পর ডিএসইতে চারশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ২৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বসুন্ধরা পেপার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-জেনেক্স ইনফোসিস, জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, প্রগতি লাইফ ইনস্যুরেন্স, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং আমরা নেটওয়ার্ক।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৮টির এবং ৬৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।