সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেনের বেশিরভাগ সময়জুড়ে মূল্যসূচকের ব্যাপক অস্থিরতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচকের কিছুটা উত্থানে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। একইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেন শুরুর ৫ মিনিট না যেতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। এতে লেনদেনের ১৯ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১০ পয়েন্ট।
অবশ্য এরপর আবার দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে থাকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে লেনদেনের ৫০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা ১৬ মিনিট গড়াতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২ পয়েন্ট কমে যায়।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের এমন অস্থিরতা অব্যাহত থাকে পরের প্রায় পুরোটা সময়জুড়েই। সূচকের এই উত্থান, তো এই পতন- এভাবে চললেও দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এই এক ঘণ্টার লেনদেনে সূচক টানা নিচের দিকে নামে। এতে লেনদেনের তিন ঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৮ পয়েন্ট।
এরপর শেষ দেড় ঘণ্টার লেনদেনে পতন থেকে বেরিয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়। এতে পতনের হাত থেকে রক্ষা মেলে এবং প্রধান মূল্যসূচকের সামান্য উত্থান দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৭৫২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭১টির। আর ৬৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮২৯ কোটি ৫৯ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১০১ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন সুজের ৭৩ কোটি ৭২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৫ কোটি ২৮ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোনালী পেপার, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিডকম অনলাইন, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ১১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৫টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।