1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

সৈয়দপুরে জামিনে বেরিয়েই আলাদত অবমাননা  বিচারাধীন জায়গায় আবারও ঘর নির্মাণের চেষ্টা

শাহজাহান আলী মনন  
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে ক্রয়কৃত জমি বেদখল করা সংক্রান্ত অভিযোগ আদালতে বিচারাধীন থাকাবস্থায় জোরপূর্বক ঘর নির্মাণের অভিযোগে আটক হয়ে জামিন নিয়ে বেরিয়েই আবারও নির্মাণ কাজ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে দখলদার প্রভাবশালীরা।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বৈধভাবে কেনা জমিতে প্রকৃত মালিক পক্ষ না গেলেও দখলকারী নাসরিন তানভীর গংরা অবলীলায় অবস্থান করছে বিরোধপূর্ণ জায়গায়। পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে তারা উল্টো প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে জাহিদের লেকজনকে। এতে চরম অসহায়ত্ব ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিয়ে কাটছে তাদের দিন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নির্মাণাধীন ঘর থেকে বিবাদমান উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিলেও পুলিশ চলে যাওয়ায় পর তানভীর ও সাকিলের নেতৃত্বে কয়েকজন আবারও সেখানে নিজেদের দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে  সাংবাদিকরা সরেজমিনে গেলে এর সত্যতা নিশ্চিত হয়। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে অবস্থানকারীরা এদিক সেদিক সটকে পড়ে। উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কামারপুকুর বাজারে সৈয়দপুর-রংপুর মহাসড়কের সাথে রাজা ফিলিং স্টেশন ও সাবেক সাজেদা কোল্ড স্টোরেজ এর পাশের জমির মালিকানা নিয়ে এ বিরোধের ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং এলাকাবাসীর মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সৈয়দপুর শহরের হাওয়ালদারপাড়ার মোঃ শফি উল্লাহ’র ছেলে মোঃ জাহিদ ফয়সাল অভিযোগ করে জানান, তিনি ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি জনৈক মোছাঃ তাবাসসুম জাহানের কাছ থেকে ১২৭ নং কবলা দলিল মূলে কামারপুকুর মৌজাধীন ২৮ শতক জমি ক্রয় করেন। যার খতিয়ান নং এস.এ ১০, বিএস ৭২৬ ও ১৯৪। দাগ নং এসএ ১৯৮/১২৩২, বিএস ৪৬৬ ও ৪৬৮ (১৭.৫০+০৩ =২০.৫০ শতক) এবং খতিয়ান নং এসএ ২৪৪, বিএস ১৯৪, খারিজ ৬২৭/৪, ২৪৩৯(নতুন) দাগ নং এসএ ২০২ বিএস ৪৬৯ ও ৪৭০ (৫.৫০+০২=৭.৫০ শতক)।
এর আগে তিনি ২০১৬ সলের ১৭ নভেম্বর উক্ত জমির পাশেই একই মৌজায় আরও ৫০.৪৩ শতক জমি ৪৬২৬ কবলা দলিল মূলে কিনেছেন। যার খতিয়ান নং এসএ (১০) খারিজ ৮৫৭ (পুরাতন) ও খারিজ ১২২৪ (নতুন), এসএ দাগ নং ১৯৮, ১৯৮/১২৩২, ৫০৬, ৫০৪, ৫০৬/১২৬৯ বিএস দাগ নং ৪৬৬, ৪৬৫, ৩৭৪, ৩৬৮, ৩৭৩। এই জমির মধ্য হতে ২৮ শতক অন্যত্র বিক্রি করেছেন। বাকি জমিতে গাছ লাগিয়ে দখলে রেখেছেন।
উল্লেখিত জমিগুলো নিজ নামে বিত্ব খারিজ করে নেন। খারিজ খতিয়ান নং ২৪৩৯ এবং খারিজ কেস নং ৩৭১১(1X-1)/১৯-২০, তারিখ -২১/০৭/২০২০ ইং।
এরই মধ্যে গত ২৭ মার্চ ২০২১ ইং শনিবার সকাল ১০টার দিকে প্রভাবশালী দখলবাজ, দূস্কৃতিকারী, দাঙ্গাবাজ, মামলাবাজ চক্রটিসহ ১০/১২ জন মিস্ত্রি নিয়ে প্রতিপক্ষ গোয়ালপাড়ার মৃত আসাফাক আহমেদের স্ত্রী মোছাঃ নাসরিন পারভীন (৪৫), তার ভাই বাঁশবাড়ী এলাকার মৃত হাজী জাকির আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদ (৪৮) ও মোঃ সাকিল আহমেদ (৪০), বাঁশবাড়ী টালি মসজিদ এলাকার মোঃ নওশাদ (১ নং স্টার গুল) উল্লেখিত জমিতে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করে।
খবর পেয়ে জাহিদ ফয়সাল উপস্থিত হয়ে নির্মাণ কাজ করা নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তানভীর ও সাকিল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং মারধরের জন্য উদ্ব্যত হয়। এসময় তাদের কাছে উপযুক্ত প্রমাণ চাইলে তারা কাগজপত্র না দেখিয়ে উল্টো হুমকি প্রদান করেন। তারা বলেন নালিশী বিত্ব শীঘ্রই জোরপূর্বক বেদখল করে নিবে, গাছপালা কেটে নিবে এবং জখম করে রক্তপাত ঘটিয়ে সাইজ করবে।
এমতাবস্থায় উক্ত জমি বেদখল করে বাড়ী ঘর কিংবা কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে কিংবা ভোগদখলে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরের দিন ২৮ মার্চ আদালতে উল্লেখিতদের নামে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার দীর্ঘদিন পার হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রতিপক্ষরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওই জমিতে ঘর নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে। অথচ আমরা সেখানে যেতেই পারছিনা। প্রভাবশালী হওয়ায় তারা যেমন অর্থ ও ক্ষমতার দাপটে জোরপূর্বক বেদখলকৃত জমিতে অবস্থান করছেন।
গত ১৮ এপ্রিল শনিবার দুপুরে শহরের শহীদ ডাঃ জিকরুল হক রোড থেকে আসামী তানভীর ও সাকিল কে আটক করে পুলিশ। পরে জামিনে বেরিয়ে এসে আসামীদের নেতৃত্বে কয়েকজন ভাড়াটে দূর্বৃত্তরা সেখানে অবস্থান নিয়ছে। পুলিশ বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই জমিতে উভয় পক্ষকেই যেতে নিষেধ করলেও তানভীর গংরা সে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যথারীতি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল হাসনাত খান বলেন, আদালত অবমাননা করে অমীমাংসিত জমিতে নির্মাণ কাজ চালানোর কারনে তানভীর ও সাকিল কে গত ১৮ এপ্রিল  আটক করে নীলফামারী জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল। তারা জামিন নিয়ে এসে আবারও ওই জমিতে গেছে যেনে ২৬ এপ্রিল মঙ্গলবার পুলিশ পাঠিয়ে তানভীরের লোকজনকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসময় উভয় পক্ষকে নিষেধ করেছি। তবুও যদি কোন পক্ষ সেখানে যায় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি