সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর সৈয়দপুরে একটি অরক্ষিত বহুতল ভবনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়েই কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃস্ট হয়ে ২ শ্রমিক গুরুত্বরভাবে আহত হয়েছে। ১৮ মার্চ বৃহৎৎস্পতিবার দুপুর সোয়া ১ টার দিকে শহরের দারুল উলুম মাদ্রাসা এলাকার আনোয়ার ডাক্তারের বাড়ির পাশে এ ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষনিক তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলেও বেডের ব্যবস্থা না হওয়ায় ফ্লোরেই চিকিৎসা চলছে তাদের। কিন্তু তাদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তারা সেখানে কাতরাচ্ছে উন্নত চিকিৎসার জন্য। আহত শ্রমিকরা হলেন সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত ডাঙ্গুয়াপাড়ার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে সাইদুল রহমান (১৬) ও নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় সংগলশি ইউনিয়নের বড়–য়া দহরপাড়ার মৃত শওকতের ছেলে একরামুল (৩৫)।
ঘটনার বিবরণে আহত শ্রমিকরা জানান, কামারপুকুর কিসামতপাড়ার শ্রমিক ঠিকাদার আলতাফের মাধ্যমে তারা ওই এলাকার হাবিব রেজা ও মুজাহিদ আলীর নির্মানাধিন ৪ তলা ভবনে মজুরের কাজ করছেন। ঘটনার সময় তারা নিচে থেকে রডের বান্ডিল নিয়ে ৪ তলায় তুলছিল। এসময় তাদের হাতে থাকা রড ভবনের সামনে ১১ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারের সাথে লাগামাত্রই তারা বিদ্যুৎস্পৃস্ট হয়ে পড়েন। এতে একরামুলের ডান হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত পুড়ে যায় এবং সে ভবনের ছাদে পড়ে যাওয়ায় মাথা ফেটে যায়। আর সাইদুল ইসলাম বিদ্যুৎস্পৃস্ট হয়ে পড়ে গেলে তার উপর রডের বান্ডিল পড়লে পুরো শরীর থেতলে যায়। এতে সে মারাত্মকভাবে আহত হয়।
এ ব্যাপারে শ্রমিক ঠিকাদার আলতাফ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শ্রমিকরা কোন প্রকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করেনি। তাই এমনটা হয়েছে। কিন্তু কেন নেয়া হয়নি বা কার দায়িত্ব ছিল এ ব্যবস্থা করার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সৈয়দপুরে এর প্রচলন নেই। তাই কোন বিল্ডিং তৈরীতেই শ্রমিকদের হেলমেড বা হ্যান্ডগ্লোবস নিয়ে কাজ করা হয়না। এটা আমাদের ঠিক হয়নি।
বহুতল ভবনের মালিক হাবিব রেজা বলেন, মুলতঃ শ্রমিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব ঠিকাদারের। কিন্তু তারা তা করেনি। ঠিকাদার না করার পরও কেন আপনি তাদের কাজ করতে দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সৈয়দপুরে কে বিল্ডিং করতে কোড মানে বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেনা। তাই আমিও করিনি। করার প্রয়োজনও পড়েনা। কিন্তু আহত শ্রমিকরা অন্যপাশ দিয়ে রড তুলতে পারতো। তারপরও বিদ্যুতের তারের দিক দিয়েই করেছে। তাই এমনটা ঘটেছে। এজন্য তারাই দায়ী।
এদিকে বিদ্যুৎস্পৃস্ট হয়ে গুরুত্বরভাবে আহত রোগীকে ফ্লোরে চিকিৎসা দেয়ায় তাদের অবনতির আশংকা থাকা সত্বেও কেন বেডের ব্যবস্থা করা হয়নি। এর কোন জবাব দেয়নি দায়িত্বরত নার্স। তাছাড়া ওই দুই রোগীসহ আরও কয়েকজন রোগীকে ফ্লোরে চিকিৎসা দেয়া হয়। তাদের পাশেই মেডিকেল আবর্জনা ও নোংরা পানি, ময়লা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থা কেন এমন প্রশ্ন করা হয় হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ ওমেদুল হাসান স¤্রাট কে। তিনি মুঠোফোনে বলেন, তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্য বলা হয়েছে।