সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর সৈয়দপুরে বেস্ট ইলেক্ট্রনিক্স শো-রুমের ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার ভবদীশ রায় ভানু (৪০) স্টোর রুমে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কের বেস্ট ইলেক্ট্রনিক্স শো-রুমে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের ভবদীশ রায় ভানুর গ্রামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায়। তিনি ওই উপজেলার কেল্লাবাড়ির কমলা কান্ত রায়ের ছেলে।
জানা গেছে, সৈয়দপুরের বেস্ট ইলেক্ট্রনিক্সের শো-রুমের ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছেন ভবদীশ রায় ভানু। মঙ্গলবার সকালে বেস্ট ইলেক্ট্রনিক্সের প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র এ্যাসিসট্যান্ট ম্যানেজার মোঃ রাজিব হোসেন আকস্মিকভাবে সৈয়দপুর ব্রাঞ্চে অডিট করতে আসেন।
তিনি জানান, তিনি শো-রুমে এসে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের পাশেই বসে কথাবার্তা বলছিলেন। এর কিছু সময় পর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ভবদীশ রায় ভানু শো-রুমের ভেতরে থাকা স্টোর রুমে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও তিনি স্টোর রুম থেকে বের না এলে ঢাকা প্রধান কার্যালয় থেকে আসা অডিট কর্মকর্তা রাজিব হোসেন তাঁর খোঁজ করতে থাকেন।
এসময় তিনি শোরুমের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ভবদীশ রায়ের খোঁজ খবর নিতে বলেন ব্রাঞ্চের অন্যান্য কর্মচারীদের। কর্মচারীরা ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের খোঁজে ওয়াশরুমে গিয়ে তা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও স্টোর রুম থেকে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার বের হয়ে না আসায় তাদের মনে তীব্র সন্দেহের উদ্রেক হয়।
পরবর্তীতে তারা বিষয়টি সৈয়দপুর থানাকে অবহিত করেন। এরপর সৈয়দপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল আলম সঙ্গীয় পুলিশ সদস্য নিয়ে তাৎক্ষণিক বেস্ট ইলেক্ট্রনিক্স শো-রুমে পৌঁছেন। পরবর্তীতে তাঁরা শোরুমের স্টোর রুমটি খুলতে ব্যর্থ হয়ে দরজা ভেঙ্গে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ভবদীশ রায় ভানুকে অচেতন অবস্থায় সেখানে পড়ে থাকতে দেখেন।
এরপর তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ভবদীশ রায় ভানু সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের আত্মহত্যা চেষ্টার সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে ব্র্যাঞ্চ পরিচালনা করতে গিয়ে ম্যানেজারের দৈনন্দিন বেচাবিক্রির হিসাবে গড়মিল থাকায় হেড অফিস থেকে অডিট আসার কারণে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন যাবৎ তাঁর পারিবারিক সমস্যা বিরাজ করছিল। তার কারণেও তিনি আত্মহত্যা চেষ্টা করতে পারেন।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ওমেদুল হাসান সরকার জানান, ট্রেনিং কোর্সে অংশ নেয়ায় তিনি জেলা সদরে অবস্থান করছেন। তাই তিনি এ বিষয়টি অবগত নন। তবে জরুরী বিভাগের রেজিস্টারে ভবদীশ রায় ভানু নামে একজন বিষাক্ত দ্রব্য পানের রোগীর নাম উল্লেখ রয়েছে। পরে ওই রোগীকে রংপুর মেডিকেলে পাঠানোর ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, বেস্ট ইলেক্ট্রনিক্স কর্তৃপক্ষ বা ম্যানেজারের পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করেনি।