সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় নতুন সড়ক নির্মাণ ও পুরোনো সড়ক সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২টি সড়ক নির্মাণে নিুমানের ইট-বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া সংস্কার কাজে বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছেনা। বারগাঁও ইউপির কৈয়া রাস্তার মাথা থেকে ভাবিয়াপাড়া রাস্তার মাথা পর্যন্ত মোল্লা পাড়া সড়কে ১ হাজার ২৫ মিটার অংশ সংস্কারে কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাহিদ কনস্ট্রাকশন।
বারগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী জাফর বলেন, ১নং ইট দিয়ে সড়ক সংস্কারের কথা থাকলেও এর তোয়াক্কা না করে অত্যান্ত নিুমানের ইট দিয়ে রাস্তা করা হচ্ছে। কার্পেটিং এ বিটুমিন না দেয়ায় এখনই হাত দিয়ে খোঁচালেই কার্পেটিং উঠে যায়। কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছেমত কাজ করে চলে যায়। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। এছাড়া সোনাইমুড়ী কলেজ গেইট থেকে মুহুরীগঞ্জ পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সংস্কার কাজ এক মাস না যেতেই বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং নামের লিপস্টিক উঠে যাচ্ছে। ভোরের বাজার-কাশিপুর নতুন সড়ক, ইসলামগঞ্জ থেকে বটতলী সড়ক সংস্কার, সোনাইমুড়ী পৌরসভা থেকে লতিফপুর সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, কাজে নিুমানের ইট-খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া নামমাত্র বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ঐ সড়কের নির্মাণ সংশ্লিষ্ট একজন শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিটুমিনের মধ্যে অতিনিুমানের বিপিসি বিটুমিন, এখানে তাও ঠিকমত ব্যবহার হচ্ছেনা। বিটুমিন কেন ব্যবহার করছেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদার যে ভাবে করতে বলেছেন, তারা সেভাবেই কাজ করছেন। এসব বিষয় নিয়ে বিগত ৭ মার্চ উপলক্ষে সোনাইমুড়ী থানা কর্তৃক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার রুহুল আমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের উন্নয়ন খাতে (সড়ক, স্কুল, ব্রীজ-কালভার্ট) কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি হচ্ছে দেখেও কিছু করতে পারছিনা বলে তিনি তার অসহায়ত্বের কথা জানান।
এলজিইডি নোয়াখালী এর নির্বাহী প্রকৌশলী একরামুল করিম এর নিকট জানতে চেয়ে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নাই। এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী রাহাত আমিন জানান, নিুমানের ইট ও বিটুমিন ছাড়া রাস্তা নির্মাণ কাজের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তা বন্ধ করতে বলা হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। নিুমানের সামগ্রী ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দরপত্রের চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রাস্তার কাজ ঠিকঠাক মত বুঝে নেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন এলজিইডি সোনাইমুড়ী উপজেলা কার্যালয়। নিুমানের সামগ্রি দিয়ে কিভাবে রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে জানতে চাইলে সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম ও কার্যসহকারী হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমত কাজ বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছি।
অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাহিদ কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন এর নিকট জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।