ইতালি ছাড়ার পর সৌদি আরবের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন রবার্তো মানচিনি।
হঠাৎই রোববার মানচিনি ইতালি ছাড়ার ঘোষনা দেন। অথচ মাত্র এক মাসের মধ্যেই ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়ন ইতালি ২০২৪ ইউরো বাছাইপর্ব খেলতে মাঠে নামতে যাচ্ছে। এদিকে ট্রান্সফার মার্কেটে গুঞ্জন রয়েছে মধ্য প্রাচ্য থেকে ২৫ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব পেয়েছেন মানচিনি।
কিন্তু চারটি ইতালিয়ান দৈনিকে প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে মানচিনি তার ভবিষ্যত নিয়ে স্পষ্ট কথা বলেছেন। কোরিয়েরে ডেলো স্পোর্টকে মানচিনি বলেছেন, ‘আমি একজন ফুটবল কোচ। আমি যখন কোনো প্রস্তাব পাব আমার কাছে সেটা পছন্দ হলে অবশ্যই গ্রহণ করবে। কিন্তু সে কারণে আমি জাতীয় দলের দায়িত্ব ছাড়িনি। ইতালি সবসময়ই আমার কাছে এক নম্বর পছন্দ। দীর্ঘদিন যাবথই আমি অনেক জায়গা থেকে অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। সেগুলো আমি আগামী কয়েক সপ্তাহ যাচাই করব। কিন্তু এই মুহূর্তে কোন সিদ্ধান্ত আমি নেই। কোচ হিসেবে আমি হঠাৎ করেই থেমে যেতে পারি না। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে আমার ইতালি ছাড়ার কোন সম্পর্ক নেই।’
ইতালির কোচ হিসেবে মানচিনির সময়টা কেটেছে অম্লমধুর । ২০২০ ইউরো জেতার মাধ্যমে জাতীয় দলের দু:সময়টা কিছুটা হলেও কেটেছে। কিন্তু গত বছর নর্থ মেসিডোনিয়ার কাছে প্লে-অফে পরাজিত হয়ে আজ্জুরিরা টানা দ্বিতীয়বারের মত বিশ^কাপে খেলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশে^র অন্যতম শীর্ষ লিগ হিসেবে পরিচিত সিরি-এ থেকেও সম্প্রতি তেমন কোনো প্রতিভা বেরিয়ে আসেনি।
এ মাসের শুরুতে ৫৮ বছরে পা রাখা মানচিনিকে ইতালি অনূর্ধ্ব-২১ ও অনূর্ধ্ব-২০ দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও জাতীয় দল থেকে পদত্যাগ সকলকে বিস্মিত করেছে। বিশেষ করে সৌদি আরবের লোভনীয় প্রস্তাবে সাড়া দিতেই মানচিনির এই সিদ্ধান্ত, এই রিপোর্টে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন তিনি।
কিন্তু মানচিনি বলেছেন ইতালি ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান গাব্রিয়েল গ্রাভিনার সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় আজ্জুরিদের কোচের দায়িত্ব থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন মানচিনি। লা রিপাবলিকা পত্রিকাকে মানচিনি বলেছেন, ‘কেউ কি কখনো দেখেছে ফেডারেশন প্রধান ম্যানেজারের কোচিং স্টাফ পরিবর্তন করছে। কিন্তু আমার সেটাই করতে হয়েছে। সত্যি বলতে কি আমাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই দূরত্ব তৈরী হয়েছিল। কিন্তু তাই বলে আমার কোচিং স্টাফকে কেন পরিবর্তন করা হবে। ঐ সময় তিনি আমাকে ছাঁটাই করতে পারতেন। তিনি যদি আমাকেই রাখবেন তবে আমার স্টাফকেও তার রাখতে হবে। কিন্তু তিনি সেটা করেননি।’
আগামী মাসে ইউরো ২০২৪ বাচাইপর্বে ইতালি নর্থ মেসিডোনিয়া ইউক্রেনের মোকাবেলা করবে। আরও একটি বড় টুর্নামেন্ট থেকে যাতে বাদ পড়তে না হয় সেটা নিশ্চিতে ফেডারেশন অচিরেই নতুন কোচের নিয়োগ দিবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। লুসিয়ানো স্পালেত্তি ও সাবেক ইতালি কোচ এন্টোনি কন্টে এই পদের জন্য ফেবারিট। কিন্তু নাপোলির সঙ্গে চুক্তি বহাল থাকায় স্পালেত্তিকে পেতে কিছুটা বেগ পেতে হতে পারে। ১৯৯০ সালের পর প্রথম লিগ শিরোপা উপহার দেবার পর ক্লাব ত্যাগ করলেও আগামী বছর জুন পর্যন্ত স্পালেত্তির সাথে চুক্তির মেয়াদ রয়েছে নাপোলির। চুক্তির শর্তানুযায়ী তিনি অন্য কোনো দলের কোচের দায়িত্ব নিতে পারবেন। তবে এ জন্য স্পালেত্তিকে বছরে তিন মিলিয়ন ইউরো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যে কারনে চুক্তি শেষ হবার আগ পর্যন্ত স্পালেত্তি প্রায় আড়াই লাখ ইউরো কম আয় করবেন।
ইতালিয়ান গণমাধ্যমের রিপোর্ট সূত্রে জানা গেছে গ্রাভিনা স্পালেত্তির বেতনের ব্যপারে নাপোলির সাথে আলোচনার চেষ্টা করছে। কিন্তু ক্লাব মালিক অরেলিও ডি লরেনটিস বলেছেন তিনি স্পালেত্তিকে এই শর্তে ছেড়েছেন যে, কিছুদিনের জন্য কোচিং থেকে দুরে থাকতে চেয়েছেন তিনি। চুক্তির দীর্ঘ শর্তে এমন কিছু ক্লজ আছে যাতে ক্ষতিপূরণ স্পালেত্তিকে দিতেই হবে।