নিজের বাবার কাছ থেকে কিনে নেওয়া নারিন্দা কাঁচা বাজারমসজিদ গলির পৈতৃক বাড়ী থেকে শেষবারের বেড় হয়ে হচ্ছেন শেখ জিসান। শৈশব থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেই পথে ছিলোজিসানের চলাফেরা, সেই পথেই এম্বুলেন্সে করে আসছে তার নিথরদেহ। গত বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীর সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করেজিসান।
পরিবারের দাবি স্ত্রী মাহির করা মানসিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা বেছে নিয়েছে জিসান। ছোটবেলায় মাকে হারানোরপর ফুফু রুনার কাছে লালিত পালিত হয় জিসান। জিসানের বাবামেসবাহ উদ্দিন মসজিদ গলির ঐ বাড়ী বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিলেএকসময় ফুফুর সহযোগীতায় সেই বাড়ী ক্রয়ের মাধ্যমে স¤পদ বেহাত হওয়া থেকে রক্ষা করেন জিসান।
তারপর প্রেমিকা মাহীকে বিয়ে করে সংসার বাধেন নারিন্দাকাঁচা বাজার মসজিদ গলির পৈতৃক এই বাড়িতেই। মাতৃহীনজিসানের অবিভাবক র“না জানায় বিয়ের পর জিসান মাহিরসংসারিক জীবনে বাসা বাধে লোভের কালো ছায়া। পিতার কাছথেকে ক্রয়কৃত ঐ বাড়ীর একাংশ বন্ধক রেখে জিসানকে ঋণ নিতেউৎসাহিত করেন স্ত্রী মাহি। স্ত্রীর কথায় উৎসাহিত হয়ে ঋণ উত্তোলন করে পারিবারিকভাবে সেই টাকা জিসান তার শশুর সাজ্জাদ হোসেনকে ধার হিসেবে দেয় কোন রকম লিখিত কাগজপত্র ছাড়া।
বন্ধককৃত ঐ ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েই জিসান-মাহি দম্পতি ঋণের টাকা পরিশোধ করে। তবে, তার শশুর সাজ্জাদ হোসেনকে দেয়া টাকাততদিনেও ফেরত আসেনি, এদিকে জিসানের স্ত্রী মাহি তার বাবারবাড়ীর পারিবারিক সমস্যা তুলে ধরে পুণরায় মোটা অংকের টাকালোন তুলে তার পরিবারকে দেয়ার অনুরোধ জানায়।
এভাবেই পরপর দুবার ঋণ নিয়ে শশুরকে টাকা দিলেও বিপত্তি ঘটে করোনাকালীন সময়ে, জিসান যেমন কর্মহীন হয়ে পরে তেমনীভাড়াটিয়া শূন্য বাড়ী থেকে টাকা না আসায় কিস্তি বাকীপড়ে যায় অনেক। ফলে করোনাকালীন সময় হতে করোনা শিথিল হওয়াঅবধি, মানসিক চাপে রিতিমতো দাম্পত্য কলোহ সৃষ্টি হয় মাহি-জিসানের সংসারে।
এমতাবস্তায় স্ত্রী মাহি রাগ করে বাপের বাড়ী চলে গেলে ফোনেবেশ কয়েকবার স্ত্রীকে ফিরে আসার অনুরোধ জানিয়ে ব্যার্থ হয়জিসান। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে স্ব-শরীরে জিসান তার স্ত্রীকেআনতে গেলে সে ফিরে না আসার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় এবংটাকা ফেরত দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে। এমনকি ঐ দিন মাহিরপরিবার জিসানকে অপমান করে তারিয়ে দেয়।
অপমানিত হয়ে ঐ ঘটনার পর মানসিক চাপে রাতে গলায় ফাঁসদিয়ে আÍহত্যা করে জিসান। মরার আগে সকল বর্ণনা লিখে যায়চিরকুটে। যা কিনা লাশ উদ্ধারের সময় কৈশোরের গন্ডি নাপেরোনো শিশু জারার দৃষ্টিগোচর হয়, মুলত আÍহত্যার ঐ সুইসাইড নোট সকলের নজরে ছোট কিশোরী জারা। কিন্ত শোকে আ”ছন্ন পরিবার ঐ ছোট বা”চার হাতে চিরকুট দেখলেওকান্নার কারণে সংরক্ষনে ব্যার্থ হয়।
এদিকে স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে মৃত জিসানের লাশ দেখতে ঐসময়রাতে নারিন্দা কাঁচা বাজার মসজিদ গলির পৈতৃক বাড়ীতে আসেজীসানের স্ত্রী মাহি, ততক্ষণে ওয়ারী থানার তদন্ত কর্মকর্তা লাশউদ্ধারের জন্য হাজির ঐ বাড়ীতে।
লাশের সুরতহাল নথির খসরা তৈরীতে যখন ব্যাস্ত তদন্তকারী পুলিশসদস্যরা, সেই সাথে কান্না ও প্রতিবেশীদের আনাগোয় গোটাবাড়ী যখন পরিপুর্ণ তখন পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ীযানা যায় শিশু জারার নিকট হতে ঐ চিরকুট নিয়ে সড়িয়ে ফেলেমাহি এবং দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায়।
এদিকে, সুরতহাল রিপোর্টে জিসানের স্ত্রীকে কোন প্রকারজিজ্ঞাসাবাদ না করে এবং জবানবন্দি না নিয়েই পুলিশপোষ্টমোর্টেম এর জন্য লাশ মর্গে পাঠায়। পরদিন সকালে থানায় গেলে বিষয়টি নজরে আনেন জিসানের পরিবার, এজাহারে স্ত্রী মাহির জবানবন্দি ছাড়াই এই মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলে রিপোর্ট দেয় পুলিশ। অথচ, জিসানের পরিবারের দাবি মানসিক চাপ সৃষ্টিকরে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। সেই সাথে পরিকল্পিত ভাবেজিসানের স্ত্রী মাহিকে বাদ দিয়েছে মামলার তদন্তকারী পুলিশকর্মকর্তা। এব্যাপারে জানতে চাইলে ঐ মামলার মামলার তদন্তকারীকর্মকর্তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, পরবর্তীতে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, কর্মহীনতার মানসিক চাপেই জিসান