1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন

স্ত্রীর সহযোগিতায় স্বামীকে মারধরের পর শরীরের আগুন দেয় ‘পরকীয়া’ প্রেমিক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট : রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার চৌবিলা চকপাড়া গ্রামের যুবক আব্দুল মজিদ ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ বিয়ে করেন একই গ্রামের আমজাদ হোসেনের মেয়ে আলপনা খাতুনকে। বিয়ের পরদিন ২৪ মার্চ নববধূর হাত ধরে হাসিমুখে চলে যান শ্বশুর বাড়িতে। কিন্তু পরের দিন আব্দুল মজিদকে হাটচৌবিলা গ্রামে একটি বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়ার তিনদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মজিদ।
বিয়ের পাঁচদিন পর আব্দুল মজিদের নির্মম হত্যার ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয়। পরে মজিদের বড় ভাই আব্দুল মমিন বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় নববধূ আলপনাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা আলপনার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় মজিদের মৃত্যুর একদিন পর তাকে আটক করে পুলিশে দেয়।
প্রাথমিকভাবে তিনি হত্যায় সহযোগিতার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু হত্যার মোটিভ জানা যায় না। এ অবস্থায় একই বছরের ১১ নভেম্বর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন। পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক এসআই মো. রায়হান আলী মামলাটি তদন্তের পাশাপাশি আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে মূল হত্যাকারী আলপনার কথিত প্রেমিক চকচৌবিলা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে জিহাদকে প্রায় দুই বছর পর ১০ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর থেকে আটক করেন।
পিবিআইয়ের সিরাজগঞ্জ পুলিশ মো. রেজাউল করিম আদালতে আসামির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে রবিবার সকালে সিরাজগঞ্জ পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, আব্দুল মজিদ ও জিহাদ দুজন বন্ধু ছিল। আর আলপনা খাতুন জিহাদের প্রেমিকা ছিল। কিন্তু সম্পর্কের বিষয়টি আব্দুল মজিদ জানত না। মজিদ আলপনাকে বিয়ে করায় বন্ধু মজিদের ওপর জিহাদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে প্রেমিকা আলপনার সাথে পরামর্শ করে মজিদকে হত্যার পর দুজনে পালিয়ে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা মাফিক মজিদ বিয়ের পরদিন আলপনাদের বাড়িতে আসে। রাত দুইটার সময় আলপনা ঘরের বাইরে আসে এবং জিহাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। স্ত্রী বাইরে যাওয়ায় মজিদও স্ত্রীর পেছনে পেছনে ঘরের বাইরে আসে। ঘরের বাইরে আসামাত্র প্রেমিক জিহাদ ও তার সহযোগী মামুন, জিহাদ, নয়ন, হাকিম ও ফিরোজ আ. মজিদের মুখ চেপে ধরে মারধর করতে করতে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়।
একপর্যায়ে আ. মজিদ নিস্তেজ হয়ে পড়লে আসামিরা মজিদকে মৃত ভেবে হাট চৌবিলা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের বাড়ির উত্তর পাশের নির্জন বাঁশ ঝাড়ে নিয়ে যান। এপর খড়কুটা জ্বালিয়ে মজিদের শরীরে আগুন দিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরদিন মজিদকে জীবিত উদ্ধার করা হলে স্ত্রী আলপনা ভয়ে বিরূপ আচরণ করতে থাকেন। এরপর গ্রামবাসী আলপনাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। আলপনা আদালতে শুধু হত্যা সহযোগিতার কথা স্বীকার করলেও হত্যাকাণ্ডের মূল মোটিভ জানা যায় না। এরপর আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি আরো জানান, আসামি জিহাদকে ১১ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করলে জিহাদ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকল আসামিদের নাম এবং হত্যাকাণ্ডে কোন আসামির কী ভূমিকা ছিল তার বর্ণনা আদালতে দিয়েছেন।
ঘটনার প্রায় দুই বছর পর পিবিআই হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছে। মামলাটি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া ও এসআই মো. রায়হান আলী শেখ তদন্ত করছেন বলেও জানান পিবিআইয়ের সিরাজগঞ্জ পুলিশ মো. রেজাউল করিম।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি