বাংলাদেশের ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে সৌম্য সরকারের বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেছিল শ্রীলঙ্কা। অন ফিল্ড আম্পায়ার গাজী সোহেল আউট দিলেও বাংলাদেশি ব্যাটার রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। থার্ড আম্পায়ার মাসুদুর রহমান বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেন। এই নিয়ে মাঠে কিছুক্ষণের জন্য উত্তেজনা ছড়ায়। যদিও কয়েক মিনিট পর খেলা গড়ায়। ম্যাচ হেরে সংবাদ সম্মেলনে এসে শ্রীলঙ্কার সহকারী কোচ নাভিদ নওয়াজ জানালেন, তারা এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ম্যাচ রেফারির কাছে জানতে চাইবে।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে বিনুরা ফার্নান্দোর শট লেংথের বল সৌম্য পুল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাট-বলে সংযোগ হয়নি। বল চলে যায় উইকেট কিপার কুশল মেন্ডিসের হাতে। লঙ্কানদের কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার গাজী সোহেল আউট দেন। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন সৌম্য। আল্ট্রা-এজে দেখা গেছে স্পাইক। আউট ভেবে ড্রেসিংরুমের কাছাকাছি চলে যান বাংলাদেশি ওপেনার। তবে টিভি আম্পায়ার মাসুদুর রহমানের দৃষ্টিতে স্পাইকের সময় বল ও ব্যাটের মধ্যে সূক্ষ্ম দূরত্ব থাকায় সৌম্যকে নট আউট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই সিদ্ধান্ত শুরুতে মেনে নিতে পারেননি লঙ্কান ক্রিকেটারা। আম্পায়ার শরফুদ্দৌলাকে ঘিরে ধরেন তারা। ওদিকে কোচ ক্রিস সিলভারউড গিয়েছিলেন চতুর্থ আম্পায়ার তানভীর আহমেদের কাছেও। সবকিছু মিলিয়ে মাঠে ও গ্যালারিতে বেশ কিছুক্ষণ উত্তেজনা ছড়ায়।
সংবাদ সম্মেলনে এসে নওয়াজ বলেছেন, ‘মাঠের আম্পায়ার আউট দিয়েছেন। টিভি আম্পায়ারের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ থাকলেই কেবল মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারে। এটা স্পষ্ট দেখা গেছে স্নিকোতে স্পাইক ছিল। আমরা এটা বড় পর্দায় দেখেছি। আমরা ম্যাচ রেফারির সঙ্গে কথা বলবো, ঠিক কী ঘটেছিল জানার চেষ্টা করবো। পর্দায় দেখানো ফুটেজ কিছু বলার জন্য যথেষ্ট নয়। আমি নিশ্চিত টিভি আম্পায়ারের কাছে মাঠের আম্পায়ার যা চেয়েছিল, সেটি পরিবর্তন করার প্রমাণ থাকবে।’
সৌম্য ১৪ রানে আউট থেকে বাঁচলেও খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি। তবে সৌম্য ওই সময় আউট হলে ২৮ রানের মাথায় ওপেনিং জুটি ভাঙার সুযোগ পেতো শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেটি না হওয়াতে এই জুটি ৬৮ রান তোলে। আর তাতেই ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে যায় সফরকারীরা। বিষয়টি উল্লেখ করে নওয়াজ বলেছেন, ‘এটা ছিল প্রথম উইকেট। এই উইকেট তুলে নিতে পারলে আমাদের শুরুটা ভালো হতো। এই ধরনের উইকেটে প্রতিটি উইকেট অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
যদিও নিজেরে ব্যাটারদের দায়ও দেখছেন শ্রীলঙ্কার সহকারী কোচ। তার মতে স্কোরবোর্ডে ১৫ থেকে ২০ রান কম হয়েছে, ‘আমার মনে হয় আমরা অন্তত ১৫-২০ রান কম করেছি। এই পিচে, বিশেষ করে সিলেটের আলোতে ভেজা উইকেটে পরে ব্যাটিং করা সহজ। বাংলাদেশ দুটি ম্যাচেই ফিল্ডিং বেছে নিয়েছে। আমার মনে হয় এই ধরনের উইকেটে টস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
লঙ্কানরা ভালো অবস্থাতেই ছিলো। কিন্তু কামিন্দু মেন্ডিসের রান আউট এবং মেহেদীর বলে চারিথ আসালাঙ্কার বোল্ড কিছুটা বিপদে ফেলেছে শ্রীলঙ্কাকে। এ প্রসঙ্গে নওয়াজ বলেছেন, ‘আমি মনে করি কামিন্দু মেন্ডিসের রান আউট এবং চারিথা আসালাঙ্কার আউট আমাদের ক্ষতি করেছে। ওই দুই উইকেট আরেকটু বেশি সময় ধরে থাকলে আমাদের উপকার হতো।’