ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, ভূমি সংক্রান্ত স্বচ্ছতার বিষয়ে মন্ত্রণালয় নজরদারি করবে এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভূমি সেবা নিশ্চিতে এবং খাসজমি ইজারা দেওয়ার বিষয়ে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে আছে।
ডিসিদের এমন প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই স্বচ্ছতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভূমি সেবা নিশ্চিত করতে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে আছে। ভূমির বিষয়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি নির্ভর করতে হয় জেলা প্রশাসকদের ওপর। ভূমি কমিশনারদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এসিল্যান্ড পর্যন্ত বিসিএস ক্যাডার, তাই আশা করছি স্বচ্ছতা বাস্তবায়ন করতে পারব। ভূমিসেবায় স্বচ্ছতা আনতে ভূমিসেবা কার্যক্রম আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
আজ বুধবার (৬ মার্চ) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের চতুর্থ দিনের প্রথম অধিবেশনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদেও তিনি এসব কথা বলেন।
নজরদারি কীভাবে থাকবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয় নজরদারি করবে। এ ছাড়া ডিসি, এসিল্যান্ড ও ইউনো আছে। আমরা স্থানীয়ভাবে সরাসরি পরিদর্শন করছি। জনগণের কাছ থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনাদের নির্দেশনা কি ছিল জানতে চাইলে ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমরা যে পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করছি সেগুলো তাদের জানানো হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে পরিচ্ছন্নতা ফিরিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়া তারা খাস জমি নিয়ে কতগুলো সুপারিশ করেছে, আমরা সেগুলো উত্তর দিয়েছি। যে-সব বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি সেসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে তাদের সহযোগিতা করা হবে, যাতে তারা সহজভাবে কাজ করতে পারে।
ভূমি অপরাধ আইনের কি অবস্থা জানতে চাইলে নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, ভূমি অপরাধ আইন হলে বিধির দরকার হয়। বিধির জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এই আইন হলে জনগণ উপকৃত হবেন। ফলে কেউ দখলে থাকলে তিনি সুবিধা পাবেন না। কাগজই হবে শেষ কথা।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, অর্পিত সম্পত্তি সংক্রান্ত অনেক আইন চলমান। ওগুলো তো আমরা নিষ্পত্তি করতে পারবো না। তবে এর বাইরে যেগুলো আছে সেগুলো যা যা করার দরকার সেসব আমরা করছি। একটি পরিপত্র ইতোমধ্যে জারি হয়েছে। স্পষ্ট করে যদি বলি, একটা খতিয়ান থেকে কেউ হয়ত বের হয়ে গেছে, ওই খতিয়ান ধরে অনেকে খাজনা দিতে পারছেন না। যারা বের হয়ে গেছে তাদেরটা আলাদা করে যারা বের হয়নি তাদের পৃথক খতিয়ান করে খাজনা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। যারা বের হয়ে গেছেন, তাদের খাস খতিয়ানে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। একটা পর্যায়ে খ তফসিল থাকবে না।
ভূমির ডিজিটালাইজেশন, ভূমি কর, নামজারি অনলাইন করার কথা। যারা সেবাটা নেবেন তাদের এখনও ভূমি অফিস বা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে যেতে হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রেকর্ড ডিজিটালাইজেশন না হওয়া পর্যন্ত এটা পুরোপুরি সম্ভব না।
কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, যেমন ধরেন একটা খতিয়ানে ১০ জন শরিক বা অংশীদার আছেন। এখন কাউকে না জানিয়ে একজন শরিক বিক্রি করে দিয়েছেন। নামজারির আগে তো অন্য শরিকদের বিষয়টি জানাতে হবে, এটা তো তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়। আইন অনুযায়ী শরিককে বঞ্চিত করার সুযোগ নেই। কিন্তু যখন ডিজিটালাইজড হয়ে যাচ্ছে তখন তো প্রত্যেকটা খতিয়ান পৃথক ব্যক্তি নামে হচ্ছে। সেই পৃথক খতিয়ান অনুযায়ী ম্যাপিং হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে চললে সাব রেজিস্ট্রার যখন রেজিস্ট্রি করবেন তা অনলাইনে চলে যাবে এসিল্যান্ডের কাছে। এসিল্যান্ড অফিসে কিন্তু সমস্ত ছবি আসছে ম্যাপসহ। কখন আর নোটিশ হবে না, অটোমেটিক নামপত্র হয়ে তার কাছে চলে যাবে। এখন আমরা যদি ভুল ম্যাপ দেই অথবা ম্যাপ যদি ডিজিটালাইজড করতে না পারি তাহলে নোটিশটা পৃথক নামেই থেকে যাবে।