যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কোনো ‘বিতর্ক বা প্রশ্ন’ নেই, তাদের তালিকা আসন্ন স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
এছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এ বছরেই বিজয় দিবসের আগে রাজাকারদের ‘সংশোধিত পূর্ণাঙ্গ’ তালিকা তৈরির কাজ শেষ করার প্রত্যাশার কথা বলেছেন তিনি।
রোববার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে ‘ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের’ দুটি বাস উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাদের নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা বিতর্ক নেই, তাদের তালিকা আমাদের মহান স্বাধীনতার মাস ২৬ মার্চে আমরা প্রকাশ করব। আর যাচাই-বাছাইয়ে যারা টিকে নাই, বা মনে করেছেন যে ন্যায়বিচার পাননি, সংক্ষুব্ধ হয়েছেন উনারা আপিল করেছেন, সেই আপিল নিষ্পত্তি হতে একটু সময় লাগবে। ওই নিষ্পত্তিতে যদি কেউ প্রমাণ হন যে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা, পরে তারা সংযুক্ত হবেন।”
রাজাকারদের সংশোধিত তালিকা প্রকাশের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আশা করছি আমরা এ বছরই সুবর্ণ জয়ন্তীতে ১৬ ডিসেম্বর রাজাকারের তালিকা প্রণয়ন করতে পারব। আগে এই তালিকা প্রণয়নে আমাদের নৈতিক অধিকার ছিল, আইনগত কোনো ভিত্তি ছিল না। ইতোমধ্যে কেবিনেটে জামুকাকে তালিকা প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়ে আইন সংশোধন হয়েছে। তবে করোনার কারণে সংসদ অধিবেশন কম হওয়ায় তা উত্থাপিত হয়নি।”
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের সুপারিশ নিয়ে আরেক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, “এ বিষয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে কারা কীভাবে জড়িত বা সম্পৃক্ততা আছে… যারা আত্মস্বীকৃত তাদের তো জবানবন্দি আছেই। আরও কারা আছে সেই রিপোর্ট দেওয়ার জন্য কমিটি করেছি। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বসে বিবেচনা করবে। তখন আমরা আমাদের মতামতও জানাতে পারব।”
নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে উদ্বুদ্ধ করতে ‘ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের’ দুটি বাস চালু করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে বাস দুটির উদ্বোধন করে মোজাম্মেল হক বলেন, “ভ্রাম্যমাণ এ জাদুঘরের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মাঝে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা হবে। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিসংগ্রামের সঠিক তথ্য জানতে পারবে।”
মন্ত্রী জানান, এই বাসে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য থাকবে। শুধু ঢাকায় নয়, সারাদেশেই চলবে এই ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।