আবু তাহের বাপ্পা : সরকার আউটসোর্সিং এন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিঃ বিভিন্ন হাসপাতালে আউটসোর্সিং মাধ্যমে জনবল সরবরাহ করে থাকেন । আউট সোর্সিং কোঃ গুলো গ্রামের সহজ সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে হাসপাতাল, ব্যাংক, বীমা, কৃষি অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তর ও পরিদপ্তরের চাকুরী দেওয়ার কথা বলে প্রলুদ্ধ করে থাকেন।। গ্রামের সাধারণ লোক গুলো জানে সরকারি হসপিটাল সরকারি দপ্তরে সরকারি চাকরি করছে। এজন্য জামানতের নাম করে জনপ্রতি ১থেকে ২ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে এসমস্ত জনবল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গুলো । এর ফলে আউটসোর্সিং কোম্পানি গুলো শত শত কোটি টাকার পাহাড় গড়ে তুলছে।
অথচ সরকারের বিধিমালা অনুযায়ী আউট সোর্সিং জনবল সরবরাহ এর নামে কোন টাকা না নেয়ার বিধান রয়েছে। সরকার আউটসোর্সিং এন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের বাসিন্দা ।প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পরিবারের সদস্যদের নাম ভাঙ্গিয়ে সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের কিছু ঠিকাদার স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রাম রাজত্ব কায়েম করে চলছে। আইনের কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন অফিসগুলোতে এদের একক আধিপত্য রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা এদের ব্যাপারে জাতীয় অর্থনীতির সাথে কথা বলেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সরকার আউটসোর্সিং এন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিঃ শুরুতে যখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জনবল সরবরাহের কার্যাদেশ পায় তখন তাদের দাখিলকৃত ডকুমেন্টস এর মধ্যে জালিয়াতি ছিল । কিন্তু এরা প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের এলাকার সুবাদে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোন কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মুখ খোলার সাহস পায়নি । এখনো তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে।
সরকার আউটসোর্সিং এন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিঃ নামীয় প্রতিষ্ঠান সাম্প্রতি জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের টেন্ডারের মাধ্যমে ১১৭ জন জনবল সরবরাহের কার্যাদেশ পাওয়ার সাথে সাথেই সরকার আউটসোর্সিং প্রকাশ্যে প্রার্থীদের নিকট থেকে জন প্রতি দেড় থেকে ২লাখ করে টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে। এরকম অভিযোগ ও প্রমাণ জাতীয় অর্থনীতির হাতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে ”সরকার আউটসোর্সিং এন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিঃ” এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম এর কাছে জাতীয় অর্থনীতির প্রতিবেদক জানতে চাইলে, তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। অথচ প্রকাশ্যে টাকা নেওয়ার ডকুমেন্টস গণমাধ্যমের হাতে রয়েছে। ইতোপূর্বে ও বিভিন্ন হাসপাতালে সরকার আউটসোর্সিং জনবল সরবরাহের সময় জামানত দেখিয়ে প্রার্থির নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সরকার আউটসোর্সিং এন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিঃ এর এমডি ও তার পরিচালকদের ব্যাংক একাউন্ট যাচাই করলে এদের টাকার উৎস সম্পর্কে তথ্য জানা যাবে।
সরকার যে উদ্দেশ্যে নিয়ে আউটসোর্সিং এর জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল একটি নির্দিষ্ট সিন্ডিকেট এর কারণে সেই উদ্যোগ সফলতা পাচ্ছে না। শুধু সরকার আউটসোর্সিং নয় যতগুলো আউটসোর্সিং কোম্পানি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে জনবল সরবরাহ করে থাকে তাদের সম্পদের হিসাব ও আর্থিক বিবরণী দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান করলে এদের অবৈধ ও প্রতারনার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের মূল রহস্য বের হয়ে আসবে।
গ্রামের সহজ সরল সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে। কোটি কোটি টাকার পাহাড় গড়ে এরা তুলে বিলাশবহুল জীবন যাপন করছে। এরই সাথে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সুবিধাভোগী একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আঁতাত রয়েছে এদের সাথে ।
শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অতি সম্প্রতি আউটসোর্সিং এর কাযাদেশ প্রদানে কর্তৃপক্ষের নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক সংবাদ গণমাধ্যমে এসেছে।
আউটসোর্সিং কোম্পানি গুলোর ব্যাপারে সরকারের নীতিমালা আরো কঠোর হওয়া উচিত। এর ফলে গ্রামের সাধারণ জনগণ প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে পারবে।
এ ব্যাপারে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইফতেখারুজ্জামান এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন সরকারের প্রতিটি সেক্টরের দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র উঠে আসছে। আউটসোর্সিং এ চাকুরীর নামে যদি গ্রামের সহজ সরল জনগনের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা নেওয়ার চিএ খুবই ভয়াবহ। কারন গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সাথে যদি কোন গোষ্ঠি প্রতারনা করে থাকে তাহলে বুঝা যাবে দুর্নীতি বাজদের দৃষ্টি এখন খেটে খাওয়া মানুষের উপর ও পড়েছে। এ জাতীয় দুর্নীতি বাজদের কঠোর হস্তে দমন না করলে প্রান্তিক জন গোষ্ঠি বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বে। দলীয় লেবাসে ঘাপটি মেরে থাকা দুর্নীতিবাজদের ডালপালা আরও বিস্তৃত হবে।