1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট এখনও বহাল তবিয়তে

আবু তাহের ব্প্পাা
  • আপডেট : শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

করোনার দ্বিতীয় থেকে তিত্বিয় ঢেউ এখন বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশেও করোনার দ্বিতীয় ধাপে দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েগিয়ে কমতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে মৃত্যুহারও । হাসপাতালগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিলনা। করোনা মহামারী এমন আকারে মানুষ নমুনা পরীক্ষাগুলো ঠিকমতো করতে পারছিলোনা। বাংলাদেশে কোনো হাসপাতালে আইসিইউ (ওঈট) বেড খালি না থাকার কারণে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মাঝে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছিল।
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। সরকারও নড়েচড়ে বসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের তালিকা করে গণমাধ্যমে প্রকাশ করলেও দুর্নীতিবাজ চক্র তেমন একটা পাত্তা দি”েছ না। দুদকের তদন্ত চলছে অত্যন্ত ঢিলেঢালাভাবে।
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির বরপুত্র খ্যাত মিঠু আজও রয়েছে অধরা। তিনি দুদকের চিঠিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে বিভাগীয় কার্যালয় ও হাসপাতালগুলোতে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছে বহাল তবিয়তে। লোক দেখানো দু’চারজনকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে বদলি করলেও মূল অভিযুক্তরা পুরোদমে নতুন উদ্যমে কাজ করে যাচ্ছে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পদের আমলনামা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তেমন একটা উদ্ধার করতে পারেনি বলে জানা গেছে। অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন ও পুরাতন ভবনে বহাল তবিয়তে রয়েছেন দুদকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তারা। ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজসে নতুন করে করোনার ইমারজেন্সির দোহাই দিয়ে তারা পুরনো সেই পথে কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
সাবেক মহাপরিচালকের অনুগত কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত থাকার কারণে দুর্নীতির মূল রহস্য উদঘাটন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দিন দিন দুদকের প্রতি দেশের মানুষের স্বাস্থ্য বাড়ছে। দেশের দুর্নীতিবাজ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর দুর্নীতিবাজদের দুদকের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হ”েছ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চেয়ারে বসিয়ে রেখে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হবে না। প্রশাসনের উ”চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের চারপাশে এদের বিচরণ। তিনি বলেন, এখনও অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন যারা দীর্ঘ ৮/১০ বছর যাবৎ একই চেয়ারে বসে আছেন। এদের খুঁটির জোর এত শক্ত যে, যত বড় কর্মকর্তা এখানে আসুন না কেন এদের সিন্ডিকেট ভেদ করা সম্ভব নয়। এদের নেটওয়ার্ক দেশব্যাপী। বদলি বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য সবকিছুই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে।
দুদকের বর্তমানে চলমান অভিযান ও অনুসন্ধান সঠিকভাবে কার্যকর করতে হলে দ্রæত সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে বলে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা মনে করেন।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ এমন কোনো হাসপাতাল নেই যেখানে দুর্নীতিবাজ চক্র সক্রিয় নেই। স্বাস্থ্য খাতের ডন মিঠুর রয়েছে ডজন ডজন নামে-বেনামে ঠিকাদারি লাইসেন্স, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিবাজ চক্র ওইসব লাইসেন্সে কাজ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কবির চৌধুরী, জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার, সৈয়দ জালাল, কমিউনিটি ক্লিনিক শাখার আনোয়ার হোসেন, হুমায়ুন চৌধুরী, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শাজাহান ফকির, উচ্চমান সহকারী শরিফুল ইসলাম, এডুকেশন শাখার (ক্যাশিয়ার) মজিবর রহমান, মো: খায়রুল, অফিস সহকারী মো: হানিফ, মাসুদ করিম, অফিস সহকারী (এনডিসি) মো: ইকবাল হোসেন, অফিস সহকারী (ইপিআই) মজিবুল হক মুন্সী, তোফায়েল আহম্মেদ, অফিস সহকারী (ডব্লিউএইও) কামরুল ইসলাম, স্টেনো টাইপিস্ট সুনীল বাবু, স্টোর ম্যানেজার (ইপিআই) হেলাল তরফদার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সিনিয়র স্টোরকিপার রফিকুল ইসলাম, আবদুল্লাহ হেল কাফি, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সচিব আনোয়ার হোসেন, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: মাহমুদুজ্জামান, হিসাবরক্ষক নাজমুল হক সিদ্দিকী প্রত্যেকেই কোটি কোটি টাকার মালিক। প্রত্যেকেই রয়েছে স্ব স্ব কর্মস্থলে বহাল তবিয়তে। স্বাস্থ্য খাতকে ওরা পুরো গিলে খাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখা, হিসাব শাখা, স্টোর শাখা, ইপিআইসহ সব জায়গায় সিন্ডিকেট আর সিন্ডিকেট। এদের সম্পদের পরিমাণ এত বেশি যে, নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। দেশের বাইরেও টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উ”চমান সহকারী, প্রধান সহকারী, স্টোরকিপার, হিসাবরক্ষক মূলত এরাই ঠিকাদারদের দুর্নীতি করার সুযোগ করে দেয়।
বৃহত্তর বরিশাল, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ ও রংপুরের একটি বিরাট সিন্ডিকেট মূলত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে গিলে খাচ্ছে।
করোনা মহামারী থেকে দেশকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পিতভাবে স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের জন্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও ঠিকাদারকে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। এর ফলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারাও জড়িতবলে তথ্যানুসন্ধানে বের হয়ে আসছে। এসব নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন আসছে জাতীয় অর্থনীতি পাতায়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি