স্যামসাং সাম্রাজ্যের যুবরাজ হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত জেই ওয়াই লি’কে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার হাই কোর্ট। ২০১৪ সাল থেকেই জেই ওয়াই লি কার্যত স্যামসাংয়ের ওপর কর্তৃত্ব চালিয়ে আসছিলেন এবং তাকে বিবেচনা করা হচ্ছিল প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যত প্রধান হিসেবে।
স্যামসাং সাম্রাজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স, যেটির প্রধান জেই ওয়াই লি। এই প্রতিষ্ঠানটির আয় দেশটির জিডিপির শতকরা ১২ ভাগের সমান।
সাম্প্রতিক রায়ে স্যামসাংয়ের ওপর লি’র নিয়ন্ত্রণ এবং স্যামাসাং ইলেকট্রনিক্সের ভবিষ্যত বিষয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে উঠে এসেছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে।
২০১৫ সালে স্যামসাংয়ের দুইটি সহায়ক প্রতিষ্ঠান একত্রিকরণের মাধ্যমে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। স্যামসাং গ্রুপের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে লি’র যে পরিকল্পনা ছিলো, ওই একত্রিকরণ তাতে সহায়তা করেছে, এমন আঁতাতের প্রমাণ পাওয়ায় আগেই জেল খেটেছেন লি।
ওই অপরাধের সঙ্গে নতুন আরও কিছু নতুন অভিযোগ যুক্ত হওয়ায় গত গত বছরের মাঝামাঝি লি’র বিরুদ্ধে আদালতের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করেন সরকারি কৌঁসুলিরা। সে সময় জামিন পেয়েছিলেন লি।
২০১৭ সালে প্রথম গ্রেপ্তার হন লি। স্যামসাং গ্রুপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক গুয়েন হাইকে ঘুষ দিয়েছিলেন, এমন অভিযোগের পাশাপাশি তহবিল আত্মসাত এবং অন্যান্য অভিযোগে লিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত।
রাজনৈতিক সমর্থন পাওয়ার আশায় পার্কের বন্ধু চই সু-সিল পরিচালিত দুইটি অলাভজনক সংস্থায় তিন কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলার ‘অনুদানের’ সত্যতা সে সময়ে পেয়েছে আদালত। ওই অভিযোগে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান পার্ক গুয়েন হাই।
২০১৭ সালের অগাস্টে লিকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। ছয় মাস পর সাজা অর্ধেক করে লি’র কারাদণ্ড বাতিল করে সিউল হাই কোর্ট। এতে সে সময় মুক্তি পেয়েছিলেন স্যামসাং উত্তরাধিকারি।
পরে আবার সংশ্লিস্ট আরো কিছু অপকর্মের অভিযোগ আনা হলে মামলা ফের সচল হয়।