গতকাল ২২ নভেম্বর চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বেলচো খান বাড়িতে সুফি সেন্টার চট্টগ্রামের মহামান্য পরিচালক খাজা ওসমান ফারুকী খাজা’জীর শুভাগমন উপলক্ষে মাহফিলে জিকরুল্লাহর আয়োজন করেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন জনাব মোহাম্মদ রুহল আমীন মাস্টার, এবং খাজা ওসমান ফারুকী (খাজা’জী) জিকিরের তা’লীম প্রদান করেন। মাহফিলের শুরুতে মো. সাইফুল্লাহ কুরআন তেলাওয়াত এবং হাসনাত জামিল রাজু, মুনির উদ্দিন নাতে মোস্তফা দ. পাঠ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাজাজী হযরত বলেন- জীবন চলার পথে নানা রকম দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি আসে। সহ্য করতে হয় অসম্ভম যাতনা। এটাই দুনিয়ার অমোঘ সত্য বিধান। আর এর প্রভাব প্রাত্যহিক জীবনে দিবালোকের মতো স্পষ্ট। জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা, অসহায়ত্ববোধের কারণে মূল্যহীন হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়েই চলছে। কিন্তু পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রেখো, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরগুলো শান্তি পায়।’ (সুরা রাদ, আয়াত : ২৮)
জিকিরের এর উদ্দেশ্য নিজের হৃদয়কে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে মানুষ যেন আল্লাহর সাথে সম্পর্ক দৃঢ়তর করতে পারে। বর্তমানে যে কলিযুগের বসন্ত আমরা পার করছি, সেখানে সম্মান, মর্যাদা ও নৈতিকতার কথা বলতে গেলে অতীত থেকে উদাহরণ টেনে আনতে হয়।
আশা করি জিকরুল্লাহ মাহফিল মানুষকে তার অন্তর্দর্শনে দৃষ্টি নিক্ষেপের পাশাপাশি হৃদয়কে পুনরায় পূর্বযুগের মানুষদের মতো আত্মোন্নয়নে উদ্বুদ্ধ করব
আমরা আমাদের শারীরিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং তা ধরে রাখা নিয়ে যতটা চিন্তিত, হৃদয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি নিয়ে ততটা চিন্তিত নই। ফলে অযত্ন-অবহেলায় আমাদের আত্মা দিন দিন কালো হয়ে যাচ্ছে।
আত্মার জন্য অযত্ন ও অবহেলা হচ্ছে- পাপ ও অশ্লীলতা থেকে দূরে না থাকা। আধুনিক প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং পুঁজিবাদী সমাজের স্রোতে গা ভাসিয়ে আমরা যেভাবে পাপাচার-অশ্লীলতার মধ্যে ডুবে যাচ্ছি, তাতে আমাদের আত্মা মরে যাচ্ছে। কিন্তু সেদিকে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই; যাবতীয় চিন্তা শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে।
অথচ শরীর তো খোলস মাত্র। আত্মা ছাড়া শরীরের নাম লাশ! সেই লাশের শেষ পরিণতি কবর। কিন্তু আত্মা চলে যায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে। তাই সৌন্দর্য যদি বৃদ্ধি করতেই হয়, তবে আমাদের আত্মার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে হবে। আর আত্মার সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং তা ধরে রাখার উপায় নিয়ে নিয়মিত জিকির মুরাকাবা, ইবাদত বন্দেগি।
কুরআনে উল্লেখ আছে- ‘সেদিন তো ধন-সম্পদ বা সন্তান-সন্ততি কারও কোনো কাজে লাগবে না; তবে (তার কথা আলাদা) যে একটি সুস্থ হৃদয় নিয়ে আল্লাহর কাছে হাজির হবে।’ সূরা আশ শুআরা: ৮৮-৮৯।