ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যাকার ওপর প্রায় চার মাস ধরে বর্বর হামলা ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে গাজার ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নজীরবিহীন সফল আল-আকসা তুফান অভিযানের দিন থেকেই নির্বিচার বিরামহীন বর্বর হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল
এই চরম ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চারজন সিনিয়র কমান্ডার জিম্মি মুক্তির ব্যাপারে এমন মন্তব্য করেছেন। তারা বলেছেন, হামাসের সঙ্গে চুক্তি করা ছাড়া জিম্মিদের তারা মুক্ত করতে পারবেন না। হামাসকে নির্মূল করা, আবার একই সঙ্গে জিম্মিদের মুক্ত করা সম্পূর্ণ ‘অপ্রাসঙ্গিক’ বিষয় বলে বর্ণনা করেছেন তারা।
হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস, তাদের হাতে আটক দুই শতাধিক জিম্মিকে মুক্ত করা এবং উপত্যাকাটিকে পুরোপুরি দখল করার লক্ষ্য নিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখল ইহুদীবাদী দেশটি। কিন্তু এতোদিনের হামলায় গাজা উপত্যকাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত এবং অন্তত ২৫ হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা ছাড়া কোন উদ্দেশ্যই অর্জন করতে পারেনি দেশটি।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন তারা। এই কমান্ডারদের কেউই নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেননি। তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) পরবর্তীতে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা কমান্ডারদের এ ধরনের মূল্যায়ন সম্পর্কে তারা জানেন না এবং তাদের মতামতের সঙ্গে আইডিএফের অবস্থানের কোনো মিল নেই।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই কমান্ডাররা জানিয়েছেন, হামাসের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে তারা অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। তারা আরও জানিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতাদের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে, হামাসের সঙ্গে কোনো চুক্তি ছাড়া জিম্মিদের উদ্ধার কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
তারা আরও জানিয়েছেন, হামাসের সঙ্গে গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত গাজার উত্তরাঞ্চলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারলেও। দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে হামাসের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ছে ইসরায়েলি সেনারা। এ ছাড়া রাফাহতে তারা এখনো কোনো ধরনের অভিযান শুরুই করতে পারেনি।
তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরুর আগে তারা ভেবেছিলেন গাজায় হামাসের ১০০ মাইল সুড়ঙ্গ রয়েছে। কিন্তু এখন তারা বুঝতে পারছেন ছোট্ট এ উপত্যকায় ৪৫০ মাইলেরও বেশি সুড়ঙ্গ তৈরি করেছে হামাস। আর সুড়ঙ্গগুলো এতটাই জটিল যে, যদি সেখানে কোনো জিম্মিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয় তাহলে তাদের জীবিত উদ্ধারের কোনো নিশ্চয়তা নেই।