আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, হিংসা দিয়ে পৃথিবীতে কখনোই কোন সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই সংঘাত মুক্ত সমাজ, সংঘাত মুক্ত পৃথিবী, যুদ্ধ মুক্ত বিশ্ব গঠনে মহাত্মা গান্ধীর দর্শন মানুষকে বহুলভাবে অনুপ্রাণিত করে। স্বাভাবিক অস্ত্রের বিপরীতে অহিংস অস্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মনে রাখতে হবে অহিংসা সৃষ্টি করে, ধ্বংস করে না।
শনিবার (২ অক্টোবর) বিকালে নোয়াখালীতে মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নবরূপায়িত গান্ধী স্মৃতি যাদুঘর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এর আগে, অতিথিরা গান্ধীজীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।
আনিসুল হক বলেন,১৯৪৬ সালে মহাত্মা গান্ধী নোয়াখালীর সুধামপুর গ্রামে পৌঁছার পর গান্ধীজি ঘোষণা দিয়ে ছিলেন আমি সর্ব অর্থে বাঙালি হয়ে গেছি আজ। তার এ কথাটা দাঙ্গা পিড়িত মানুষের মন জিতে নিয়ে ছিল। গান্ধীর সম্পর্কে অবাধ শ্রদ্ধা আজো দেখা যায় এ অঙ্গনে। আসলে এর পিছনে ছিল সাহস। বাঙালি না হয়েও গান্ধীজি যা দেখাতে পেরে ছিলেন। এমন সাহসের অনেক নজির আজো অকোচিত রয়ে গেছে বাংলার ইতিহাসে।
মন্ত্রী বলেন, সে সময় মুসলিম লীগ নেতারা পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাতে থাকেন যেন মহাত্মা গান্ধীকে নোয়াখালী থেকে বিতাড়িত করা যায়। মুসলিম লীগ সমর্থিত পত্রিকাগুলো তাকে বিচ্ছিন্ন ভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ব্যঙ্গ সহকারে খবর পরিবেশন করা হত। মুসলিম লীগের এসব কুপ্রচারণায় গান্ধীজি মোটেও বিচলিত হননি। হিংসা থেকে দূরে রাখাই ছিল মহাত্মা গান্ধীর অন্যতম মূলমন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, আজ সারা বিশ্বে সম্প্রদায় সম্প্রদায় জাতিতে জাতিতে যে বিদ্বেষ, হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে তা থেকে মানবজাতীকে রক্ষা করতে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস বাণী প্রেরণা যোগায়। হিংসা দিয়ে পৃথিবীতে কখনোই কোন সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই সংঘাত মুক্ত সমাজ, সংঘাত মুক্ত পৃথিবী, যুদ্ধ মুক্ত বিশ্ব গঠনে মহাত্মা গান্ধীর দর্শন মানুষকে বহুলভাবে অনুপ্রাণিত করে। স্বাভাবিক অস্ত্রের বিপরীতে অহিংস অস্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মনে রাখতে হবে অহিংসা সৃষ্টি করে, ধ্বংস করে না।
গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার শ্রী বিক্রম দোরাইস্বামী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর এমপি, অরোমা দত্ত এমপি, বাংলাদেশে জাতিসংঘের অন্তবর্তীকালীন প্রতিনিধি তৌম পউতিআইনেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, পুলিশ সুপার এসপি মো. শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।