লেনদেন আরও সহজ করতে বেসরকারি খাতের ১০টি ব্যাংক মিলে একটি ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে । যৌথভাবে প্রস্তাবিত এ ব্যাংকের নাম হবে ‘ডিজি টেন ব্যাংক পিএলসি।
ব্যাংকগুলো হলো- মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), দ্যা সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক (এনসিসিবি), ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল), , পূবালি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড। অর্থাৎ এই দশটি ব্যাংক হলো ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা।
একাধিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন, বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে ডিএসইর মাধ্যমে পিএসআই প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাদের। পিএসআই প্রকাশ করেই ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বড় ধরনের কোনো বিনিয়োগ বা ব্যবসায় নতুন কিছু সংযোজিত হলে বিনিয়োগকারীদের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) জানাতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করে গত জুন মাসে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে । ১ আগস্ট আবেদনের শেষ তারিখেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় ১৭ আগস্ট পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এমন সময়ই ১০ ব্যাংকের এ উদ্যোগের কথা জানা গেল।
প্রস্তাবিত ‘ডিজি টেন ব্যাংক পিএলসি’তে মালিকানায় অংশ নেওয়ার কথা জানিয়ে বেসরকারি খাতের মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমটিবি। মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশ করে বিনিয়োগকারীদের জানিয়ে দেব আগামী কার্যদিবসের মধ্যে।
ব্যাংক দশটির মধ্যে বুধবার সিটি ব্যাংক মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করেছে। ডিজিটাল ব্যাংকটিতে সিটি ব্যাংক বিনিয়োগ করবে পরিশোধিত মূলধনের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। অর্থাৎ এই ব্যাংকে সিটি ব্যাংকের শেয়ার থাকবে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ১৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন হবে ন্যূনতম ১২৫ কোটি টাকা। সিটি ব্যাংক বিনিয়োগ করলে তা হবে ডিজিটাল ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। শতাংশ।অর্থাৎ এই ব্যাংকে সিটি ব্যাংকের শেয়ার থাকবে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। ডিএসইর ওয়েবসাইটে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রস্তাবিত ‘ডিজি টেন ব্যাংক পিএলসি’তে বিনিয়োগ কর বে সিটি ব্যাংক।
১০ ব্যাংকের এ কনসোর্টিয়ামের বাইরেও ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’-এ বিনিয়োগ করার কথা ঘোষণা দিয়েছে, যেখানে ৫১ শতাংশের মালিকানা হবে ব্র্যাক ব্যাংকের।
এ দুটি ছাড়া কনসোর্টিয়ামে আরও আট ব্যাংক যোগ দিতে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার তিনটি ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ডেকেছে প্রস্তাবিত ‘ডিজি টেন ব্যাংক পিএলসি’-এ বিনিয়োগ অনুমোদন সব মিলিয়ে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় এখন পর্যন্ত ১১টি ব্যাংক বিনিয়োগে আগ্রহের কথা জানাল। সেখানে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় অন্যান্য শর্তের মধ্যে উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ১২৫ কোটি টাকা ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন থাকার কথা বলা হয়। যেখানে প্রচলিত ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন হচ্ছে ৫০০ কোটি টাকা।
উদ্যোক্তো হতে চাইলে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকার শেয়ার ধারণ থাকতে হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ সর্বশেষ সংশোধনী (২০২৩) এর ১৪ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা পরিবারের সদস্য বা প্রতিষ্ঠান, একক বা যৌথভাবে কোনো ব্যাংকের মোট শেয়ারের ১০ শতাংশের বেশি ক্রয় করতে পারবে না।
নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংকের ব্যবসা শুরুর পর প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৫ বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে। তবে এখানে শর্ত হচ্ছে, আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ উদ্যোক্তাদের সরবরাহ করা প্রাথমিক মূলধনের কম হতে পারবে না।
ডিজিটাল ব্যাংকের মালিকানার বেলায়ও ব্যাংক কোম্পানি আইন প্রযোজ্য হওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকের ৫ শতাংশের বেশি মালিকানা পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।