সুইডেনের ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন। দায়িত্ব নেওয়ার ১২ ঘণ্টা না যেতেই বুধবার পদত্যাগ করেছেন। জোটের শরিক গ্রিন পার্টি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা অ্যান্ডারসন বুধবার পদ ছাড়তে বাধ্য হন। খবর রয়টার্সের।
পদ ছাড়ার আগে পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে অ্যান্ডারসন আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশা প্রকাশ করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে অন্য একটি দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনের কথা বলেন তিনি।
গ্রিন পার্টি জোর সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়ে সুইডেনের পার্লামেন্ট বাজেট বিল প্রত্যাখ্যান হয়।
পদত্যাগের পর এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্ডারসন বলেন, আমিই স্পিকারকে বলেছিলাম যেন আমাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্টির নেতা হিসেবে আমি আবারও প্রধানমন্ত্রী হব।
বুধবার সুইডেনের পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন। এর আগে তিনি দেশটির অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। একই সঙ্গে সুইডিশ রাজনৈতিক দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতৃত্বেও রয়েছেন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন।
সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই নেতা জানান, সুইডেনের সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী, জোটগতভাবে গঠিত কোনো সরকার থেকে একটি দল বেরিয়ে গেলে পুরো সরকারেরই পদত্যাগ করা উচিত। তার ভাষায়, ‘আমি এমন কোনো সরকারের নেতৃত্বে থাকতে চাই না, যার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।’
এদিকে দলীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সুইডিশ পার্লামেন্টের স্পিকার।
জানা গেছে, গ্রিন পার্টি সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলেও বাম দলগুলো অ্যান্ডারসনকে সমর্থন দিতে চায়। এ ক্ষেত্রে অ্যান্ডারসনের আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ আছে।
গত ১০ নভেম্বর সুইডেনের মধ্য-বামপন্থি প্রধানমন্ত্রী স্টিফান লোফভেন আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করায় বুধবার তার স্থলাভিষিক্ত হন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য সুইডেনের ৩৪৯ আসনের সংসদে অ্যান্ডারসনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ১১৭ জন, ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন ৫৭ জন, বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৭৪ জন এবং একজন অনুপস্থিত ছিলেন।
সুইডেনের সংবিধান অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী হতে কারও তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ার দরকার নেই, শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য তার বিরোধিতা না করলেই হলো।
গণতন্ত্র সূচক ও এইচডিআই সূচতে সুইডেন এগিয়ে থাকলেও লৈঙ্গিক সমতায় পিছিয়ে ইউরোপের এই দেশ। গত ১০০ বছরে এই প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পেয়েছিল দেশটির জনগণ। সেটিও টিকল ১২ ঘণ্টার কম।
প্রতিবেশী নরওয়েতে ৪০ বছর আগে নারী প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসেছিল। এশিয়ার দেশ শ্রীলংকায় প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেয়, ১৯৬০ সালে।