আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আলোচনায় বসতে যাচ্ছে আফগান সরকার ও তালেবান জঙ্গিগোষ্ঠী। কাতারের রাজধানী দোহায় রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হবে এ ঐতিহাসিক আলোচনা। আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবান শীর্ষ নেতৃত্বের সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন মার্কিন স্বরাষ্ট্রসচিব মাইক পম্পেও।
আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত মার্চে। কিন্তু আফগান সরকারের আপত্তিতে তা আটকে ছিল এতদিন। অবশেষে আগামিকাল থেকে শুরু হতে চলেছে ঐতিহাসিক সেই আলোচনা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে ঐতিহাসিক এক চুক্তি সই করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই চুক্তির মধ্য দিয়ে অবসান হয়েছিল আফগানিস্তানে দেড় যুগ ধরে চলে আসা যুদ্ধ। চুক্তিতে সই করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমে খালিলজাদ তালেবান রাজনৈতিক প্রধান মোল্লাহ আব্দুল গনি বারাদার। সেখানে স্থির হয়েছিল, আফগান সরকার পাঁচ হাজার তালেবান বন্দিকে মুক্তি দেবে। তালেবানও এক হাজার আফগান সেনাকে মুক্তি দেবে।
এরপর কয়েকমাস কেটে গেছে। তালেবানের শর্ত অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে সেনার সংখ্যা ১২ হাজার থেকে কমিয়ে ৮,৬০০ করার কথা ছিল আমেরিকার। যে প্রক্রিয়া ফেব্রুয়ারিতেই শুরু করে দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন।
কিন্তু তালেবানের চাহিদামতো ৫ হাজার জঙ্গিকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে বেঁকে বসে আশরাফ গনির সরকার। আফগান সরকার জানায়, জঙ্গিমুক্তির বিনিময়ে আফগানিস্তানে যে শান্তির প্রতিশ্রুতি তালেবানরা দিয়েছিল, তা তারা রাখেনি। বরং জঙ্গি হামলা বেড়েছে।
শেষমেশ ৪০০ জন জঙ্গির মুক্তি নিয়ে ফের জটিলতা সৃষ্টি হয়। আফগান সরকার জানায়, এই জঙ্গিদের মুক্ত করা সম্ভব না। অবশেষে সেই জটিলতাও কেটে গেছে। গত মঙ্গলবার শেষ ছয় তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে আফগান সরকার। এর মধ্য দিয়ে দু’পক্ষের আলোচনায় বসাটা নিশ্চিত হয়েছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে আফগানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার হামলার কয়েক সপ্তাহ পর দেশটিতে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ১৮ বছর ধরে আফগানিস্তানে মার্কিন হামলায় লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের জটিলতার শঙ্কায় এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকে।