বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সম্মুখীন লক্ষ লক্ষ মানুষকে সাহায্য করার জন্য সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালে সংস্থাটির কাজের জন্য ২.৫৪ বিলিয়ন ডলারের আবেদন করেছে।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এটি বর্তমানে অভূতপূর্ব বহুমাত্রিক জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।
সংস্থাটি ইউক্রেনের নৃশংস যুদ্ধ এবং ইয়েমেন, আফগানিস্তন, সিরিয়া এবং ইথিওপিয়াতে সংঘাতের কারণে স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাবের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয় যেমন গত বছর পাকিস্তানে ভয়ঙ্কর বন্যা এবং সাহিল (উত্তর আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলের ৯টি দেশ) এবং হর্ন অব আফ্রিকার (সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও কেনিয়া) জুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার বিষয় উল্লেখ করেছে।
এই সব জরুরি অবস্থার মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারি এবং হাম ও কলেরার মতো অন্যান্য মারাত্মক রোগের প্রাদুর্ভাবের ওভারলেপিংয়ের কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যাপক হুমকির প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে।
ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস অর্থ সংস্থানের আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘সঙ্কটের একটি অভূতপূর্ব সংযোগ প্রত্যক্ষ করছি যা মোকাবিলায় একটি অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়া দাবি করে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব দূরে অন্য কোন দিকে তাকাতে পারে না এবং আশা করি এই সংকটগুলো নিজেরাই সমাধান করবে।’
তিনি বলেন, ডব্লিউএইচও বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৫৪টি স্বাস্থ্য সংকটে সাড়া দিচ্ছে। যার মধ্যে ১১টি সর্বোচ্চ-সম্ভাব্য স্তরের জরুরি অবস্থা হিসেবে স্থান পেয়েছে, যার জন্য ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ইউক্রেনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি জার্নো হাবিচ্ট উল্লেখ করেছেন যে প্রায় এক বছর আগে রাশিয়া তার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে সংঘাত-বিধ্বস্ত দেশটি হাসপাতাল এবং অ্যাম্বুলেন্সে আঘাত হানাসহ স্বাস্থ্য সেবার ওপর ৭০০টিরও বেশি আক্রমণ চালানো হয়েছে।
একই সময়ে ইউক্রেনজুড়ে জরুরি অবকাঠামোতে ব্যাপক আক্রমণের কারণে ‘স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলো তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে না’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রায়শই বিদ্যুৎবিহীন, গরম পানি বা কখনো পানি ছাড়াই ‘খুব কঠিন পরিস্থিতিতে’ কাজ করছে।
সামগ্রিকভাবে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা আকাশচুম্বী হওয়ায় অনেকগুলো জরুরি স্বাস্থসেবা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
জাতিসংঘ অনুমান করেছে, বিশ্বব্যাপী রেকর্ড ৩৩৯ মিলিয়ন মানুষের এই বছর জরুরি সহায়তার প্রয়োজন হবে যা ২০২২ সাল থেকে প্রায় এক-চতুর্থাংশ বেশি।