২০২১ সালের ইউএস ওপেন ফাইনাল ম্যাচের পুনরাবৃত্তি ঘটছে এবার। এবারও মুখোমুখি হন নোভাক জকোভিচ ও ড্যানিল মেদভেদেভ। সেই ম্যাচ জিতে নেন ড্যানিল মেদভেদেভ। সেই ম্যাচেরই এবার প্রতিশোধ নিলেন টেনিসের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই প্লেয়ার। বছরের শেষ এবং নিজের ২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যামে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে থাকেন জকোভিচ। আর সেই সুবাধেই ৬-৩, ৭-৬ (৭-৫), ৬-৩ গেমে জিতে নিলেন এ ম্যাচ।
সার্বিয়ার এই ৩৬ বছর বয়সী টেনিস তারকা ২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে টেনিস কিংবদন্তি মার্গারেট কোর্টকে ছুঁয়ে ফেললেন। এই জয়ের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তারকা মহিলা টেনিস খেলোয়াড় সেরেনা উইলিয়ামসকেও ছাপিয়ে গেলেন তিনি।
মাইলফলকের ম্যাচে শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন নোভাক। প্রথম সেটের শুরুতেই মেদভেদেভের সার্ভিস ব্রেক করে দেন। সেই সেট তিনি জিতে নেন ৬-৩ ব্যবধানে। প্রথম থেকেই ড্যানিল মেদভেদেভকে কোনোভাবে দাঁত ফুটানোর সুযোগ দেননি সার্বিয়ান তারকা। ১ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ধরে খেলা হয় এই ফাইনাল। নোভাক প্রতিপক্ষকে খুব একটা সুযোগ না দিলেও ২০২১ সালের ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়ন যে খুব সহজে ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছেন তা নয়। দ্বিতীয় সেট গড়ায় ট্রাইবেকার পর্যন্ত।
সেই সেট জেতার পরে কার্যত সবাই বুঝে যান যে চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছেন নোভাক। কারণ এত বছর তার ক্যারিয়ারে পরপর দুটি সেট জেতার পর ফাইনাল ম্যাচে এখনও তাকে কেউ হারাতে পারেনি। এদিনও ঠিক তাই হলো। তাই জিতলেন তিনি। দীর্ঘ এই ফাইনাল ম্যাচ চলাকালীন বারবার অস্বস্তিতে পড়েছেন নোভাক। নিজের ব়্যাকেট এবং হাঁটুতে হাত দিয়ে হাঁপিয়ে নিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছিল তার পায়ে টান লাগছে। কিছুক্ষণ বিশ্রামও নেন তিনি। ফিরে এসে ফের মেজাজ ধরেন।
বিপক্ষে থাকা রুশ তারকা যে সেফ উড়ে গিয়েছেন তা নয়। লড়াই করেছেন। জকোকে মাঝে মধ্যেই কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন। সেটে পড়ে গিয়ে জকোভিচের হাত ধরতে চাননি। তবে শেষ পর্যন্ত হেরে যান ২৩ বছর বয়সী এই তরুণ। ট্রফি নেওয়ার সময় অবশ্য রসিকতা করেছেন জকোভিচের সঙ্গে। তাকে বলেছেন, ‘তুমি এখানে এখনও কি করছো’।
কয়েক মাস আগেই উইম্বলডনের ফাইনালে আলকারাজের বিরুদ্ধে হেরে গিয়েছিলেন জকো। সেই ম্যাচে হারের পর থেকে টানা ১২টি ম্যাচ জিতলেন তিনি। এই বছর তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন। গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের তালিকায় রাফায়েল নাদাল (২২) এবং রজার ফেডেরারকে (২০) আগেই পেছনে ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। এদিন ছুঁয়ে ফেললেন পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে সব থেকে বেশি সিঙ্গলসে গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালকিন মার্গারেটকে।
নিউইয়র্কে এই নিয়ে মোট চারবার চ্যাম্পিয়ন হলেন নোভাক। এর আগে কোভিড মহামারির সময় টিকা নেওয়ার বিরুদ্ধে থাকায় অস্ট্রেলিয়া ওপেনসহ এই টুর্নামেন্টেও অংশগ্রহণ করতে পারেননি তিনি। অস্ট্রেলিয়া ওপেন থেকে তার রয়েছে দশটি ট্রফি। উইম্বলডন থেকে সাতটি এবং ফ্রেঞ্চ ওপেন থেকে তিনটি ট্রফি। অনেক আগেই পেছনে ফেলে দিয়েছিলেন টেনিস কিংবদন্তি রাফায়েল নাদাল এবং রজার ফেডেরারকে। রজার বছর খানেক আগেই টেনিস থেকে অবসর নিয়েছেন, অন্যদিকে রাফায়েল নিজের চোটের কারণে ইউএস ওপেনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। এই জয়ের পর নোভাক জকোভিচ আবার বিশ্ব টেনিসের এক নম্বর স্থান ফিরে পাবেন।