সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি কে? তা জানতে চেয়েছেন সংগঠনটির সাবেক চার সভাপতি। তারা হলেন— জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ এবং ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটিকে পাঠানো চিঠিতে তারা এ প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, সমিতির সভাপতি (২০২১-২২ মেয়াদে নির্বাচিত) জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু গত বছরের ১৪ এপ্রিল মারা যান। সভাপতি হিসেবে তার মেয়াদ ছিল গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এ অবস্থায় সমিতির সভাপতি কে? অপর দুটি প্রশ্ন হচ্ছে, অযোগ্যদের নাম কেন ২০২২-২৩ নির্বাচনে ভোটার তালিকায় এসেছে। আসছে নির্বাচনে সদস্যদের ভোট ইলেকট্রিক্যালি গণনার ম্যানডেট (ক্ষমতা) কীভাবে এলো।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) চার শীর্ষ আইনজীবীর চিঠি পাওয়ার বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চিঠির বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মর্যাদা রক্ষা এবং সদস্যদের কল্যাণে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বেআইনি এবং গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়গুলো সংশোধনের জন্য দ্রুত একটি অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে অবৈধ ভোটারমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির প্রস্তাবও রয়েছে তাদের চিঠিতে।
চিঠিতে তারা আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোটার তালিকায় এমন অনেকের নাম দেখা যায়, যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য নন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সমিতির সদস্যরা সাধারণত সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশা পরিচালনা করবেন। তাদের শুধু ঢাকার মেট্রোপলিটন এলাকায় একটি কার্যালয় থাকবে। তবে আমরা দেখছি ঢাকার বাইরে অধস্তন আদালতে আইন পেশা পরিচালনা করেন, এমন অনেক আইনজীবীর নামও ভোটার তালিকায় রয়েছে। ফলে ২০২২-২৩ মেয়াদের নির্বাচনের আগেই এসব অবৈধ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে সংশোধন করা প্রয়োজন।
সুপ্রিম কোর্ট বারের আগামী নির্বাচনে ভোট গণনায় ইলেকট্রনিক মেশিন ব্যবহারের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি বলেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা। তারা বলেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা অন্য কোনো যন্ত্রের মাধ্যমে ভোট গণনার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা গঠনতন্ত্রের ১৫ (৬) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২১-২২ মেয়াদের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু মারা যাওয়ার পর এক বিশেষ সাধারণ সভায় আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এ আমিন উদ্দিনকে বাকি সময়ের জন্য কণ্ঠভোটে সভাপতি ঘোষণা করেন। কিন্তু বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা তা মেনে নেননি।