৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে পরীক্ষা আয়োজন করতে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ৪১তম বিসিএসের ১০ পরীক্ষার্থীর করা এক রিটের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর ফলে ১৯ মার্চ ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজনে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
১৯ মার্চে ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে স্থগিত চেয়ে মো. রায়হান সুলতানসহ ১০ পরীক্ষার্থী গত বৃহস্পতিবার এ রিট করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রবিউল আলম ও খুরশিদ আলম। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
পরে খুরশিদ আলম বলেন, করোনার প্রকোপ বাড়ছে। নৌ অধিদপ্তরসহ দুটি পরীক্ষা করোনা পরিস্থিতির কারণে স্থগিত হয়েছে। তাই ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে রিট করা হয়। আদালত রিট খারিজ করে দিয়েছেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার চিন্তাভাবনা চলছে।
৪১ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ১৯ মার্চ (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওইদিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবেন শিক্ষার্থীরা। ৮টি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠেয় এ পরীক্ষায় হাতঘড়ি, অলঙ্কার ও কোনো ধরনের ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ওই দিন পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের নিষিদ্ধ সামগ্রী না আনতে নির্দেশনা দিয়েছে পিএসসি। পরীক্ষা কেন্দ্রে কী কী আনা যাবে আর কী কী আনা যাবে না তা পরীক্ষার্থীদের একদিন আগে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পিএসসি।
৪১তম বিসিএসে কত পদ
২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি । এতে বিভিন্ন পদে ২ হাজার ১৩৫ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে শিক্ষা ক্যাডারে। এই ক্যাডারে ৯১৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে বিসিএস শিক্ষায় প্রভাষক ৯০৫ জন, কারিগরি শিক্ষা বিভাগে প্রভাষক ১০ জন নেওয়া হবে। শিক্ষার পরে বেশি নিয়োগ হবে প্রশাসন ক্যাডারে। প্রশাসনে ৩২৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। পুলিশে ১০০ জন, বিসিএস স্বাস্থ্যে সহকারী সার্জন ১১০ জন ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন ৩০ জন নেওয়া হবে।
পররাষ্ট্রে ২৫ জন, আনসারে ২৩ জন, অর্থ মন্ত্রণালয়ে সহকারী মহাহিসাবরক্ষক (নিরীক্ষা ও হিসাব) ২৫ জন, সহকারী কর কমিশনার (কর) ৬০ জন, সহকারী কমিশনার (শুল্ক ও আবগারি) ২৩ জন ও সহকারী নিবন্ধক হিসেবে ৮ জন নেওয়া হবে। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ১২ জন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী ৪ জন, সহকারী ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট ১ জন, সহকারী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ১ জন, সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ২০ জন, সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) হিসেবে ৩ জনকে নেওয়া হবে। তথ্য মন্ত্রণালয়ে সহকারী পরিচালক বা তথ্য কর্মকর্তা বা গবেষণা কর্মকর্তা ২২ জন, সহকারী পরিচালক (অনুষ্ঠান) ১১ জন, সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক ৫ জন, সহকারী বেতার প্রকৌশলী ৯ জন, স্থানীয় সরকার বিভাগে বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে সহকারী প্রকৌশলী ৩৬ জন, সহকারী বন সংরক্ষক ২০ জন।
সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল পদে ২ জন, বিসিএস মৎস্যে ১৫ জন, পশুসম্পদে ৭৬ জন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ১৮৩ জন ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ৬ জন, বিসিএস বাণিজ্যে সহকারী নিয়ন্ত্রক ৪ জন। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ৪ জন, বিসিএস খাদ্যে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক ৬ জন ও সহকারী রক্ষণ প্রকৌশলী ২ জন, বিসিএস গণপূর্তে সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ৩৬ জন ও সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম) হিসেবে ১৫ জন কর্মকর্তাকে এই বিসিএসে নিয়োগ দেওয়া হবে।