হজের ফিরতি ফ্লাইট আজ রোববার (২ জুলাই) থেকে শুরু হচ্ছে। তবে প্রথম ফ্লাইটটি বাংলাদেশে যখন অবতরণ করবে তখন ৩ জুলাই সোমবার।
হজযাত্রী বহনকারী এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, হজ অফিসের বরাত দিয়ে হজ পোর্টালে জানানো হয়েছে, ২ জুলাই হজের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয়ে চলবে ২ আগস্ট পর্যন্ত।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস জানিয়েছে, আজ রাতে সৌদি আরবের মদিনা মনোয়ারা বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফিরতি ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে ছাড়বে। সোমবার (৩ জুলাই) ভোরে ফ্লাইটটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেসব হাজিরা হজ করতে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে থেকে ৪১৯ জন হাজিকে নিয়ে প্রথম ফ্লাইট রোববার রাতে রওনা করবে। সোমবার ভোর ৬টা ৫ মিনিটে হাজিদের নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করবে। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২ আগস্ট।
এদিকে হাজিদের ফিরতি ফ্লাইটের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে মক্কার বাংলাদেশ হজ অফিসে সমন্বয় সভা করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ) এবং প্রশাসনিক দলের দলনেতা মো. মতিউল ইসলামের সভাপতিত্ব করেন। সভায় হজ পরবর্তী সরকারি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হাজিদের নির্বিঘ্নে দেশে ফেরার জন্য বিভিন্ন করণীয় বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে হজ প্রশাসনিক (প্রথম এবং দ্বিতীয়) দলের সদস্য, কাউন্সিলর (হজ) মো. জহিরুল ইসলাম, চিকিৎসক এবং আইটি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
হজ অফিসের তথ্যমতে, বিগত বছরে হাজিদের জন্য বোতলজাত জমজমের পানি ফ্লাইটে দিয়ে দেওয়া হতো। এবার সে পানি আগে থেকে বহন করে ঢাকায় নিয়ে এসেছে এয়ারলাইন্সগুলো। তাই হাজিদের লাগেজে জমজমের পানি না আনার পরামর্শ দিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো। হাজিরা ঢাকায় হযরত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রত্যেককে ৫ লিটার করে জমজমের পানির বোতল দেওয়া হবে। হজযাত্রীদের পৌঁছে দেওয়ার পর ফিরতি ফ্লাইটে জমজমের পানি এনে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মজুত রাখা হয়। চট্টগ্রাম অথবা সিলেট বিমানবন্দরেও একইভাবে জমজমের পানি পাবেন হাজিরা। কোনো হাজি লাগেজে করে জমজমের পানি আনতে চাইলে লাগেজটি সৌদিতেই থেকে যাবে। কিংবা সৌদি বিমানবন্দরে লাগেজ থেকে পানি ফেলে দেওয়ার পরই তা বিমানে তুলতে দেবে। একইভাবে অনেকে উট ও দুম্বার কাঁচা মাংস ফ্রোজেন করে আনার চেষ্টা করেন। এটা না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ২৭ জুন মঙ্গলবার পালিত হয় পবিত্র হজ। এরপর শুক্রবার শেষ হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। যারা আগে মদিনায় যাননি তারা এখন মদিনায় যাচ্ছেন। আর যারা আগে মদিনা পর্ব সম্পন্ন করেছেন তারা এবার দেশে ফিরবেন। এর আগে সবাই বিদায়ি তওয়াফ সম্পন্ন করবেন, যা হজের সর্বশেষ আনুষ্ঠানিকতা।
চলতি বছর ৩২৫টি ফ্লাইটে মোট এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন বাংলাদেশি হজের উদ্দেশে সৌদি আরবে গেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ১৫৯টি ফ্লাইটে ৬১ হাজার ১৮০ জন হজযাত্রী; সৌদি এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ১১৩টি ফ্লাইটে ৪১ হাজার ৪৬৮ জন হজযাত্রী এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ৫৩টি ফ্লাইটে ২০ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী।
গত ২১ মে হজ ফ্লাইট শুরু হয়। শেষ হয় ২৪ জুন। চলতি বছর হজে এখন পর্যন্ত ৫১ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত গরমে অনেকেই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
এদিকে সৌদি থেকে জমজমের পানি না কেনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে হাজিদের বহনকারী তিনটি এয়ারলাইন্স। ঢাকায় হজরত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রত্যেক হাজি পাঁচ লিটারের জমজমের পানির একটি বক্স পাবেন। ঢাকা ছাড়া চট্টগ্রাম অথবা সিলেট বিমানবন্দরে একইভাবে জমজমের পানি পাবেন হাজিরা। অন্যান্য বছর হাজিদের জন্য বোতলজাত সেই পানি ফ্লাইটে দিয়ে দেওয়া হতো। এবার সেই পানি আগেই থেকে বহন করে বিমানবন্দরে নিয়ে এসেছে এয়ারলাইন্সগুলো। সেজন্য হজযাত্রীদের লাগেজে জমজমের পানি না আনার পরামর্শ দিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো।