ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের দেয়া তালিকা থেকে ৪১ হাজার ৭১৯ জন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেছে মিয়ানমার। এই তালিকা ধরে আগামী মার্চ-এপ্রিলে প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলে আশা করছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গাদের জন্য চীন সরকারের ‘ইর্মাজেন্সি রাইস এইড’ হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
চলমান আলোচনা অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল (১৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সব বিষয়ে পজিটিভ আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমার রিয়ালাইজ করেছে তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া দরকার। বাংলাদেশও ফিল করে তারা (রোহিঙ্গা) সম্মানের সঙ্গে নাগরিক অধিকার নিয়ে ফিরে যাক। চীন সরকারও চায় বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে তাদের ফিরে যাওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের গ্রামভিত্তিক রিপ্যাট্রিয়েশনটা চায়। কিন্তু মিয়ানমার সরকার চায় বাংলাদেশ সরকার যে তালিকা দিয়েছে এবং যে তালিকাটা তারা ভেরিফাইড হয়েছে সেই তালিকা অনুযায়ী ফেরত নিতে চায়। এই জায়গায় গতকালকের মিটিংটি শেষ হয়েছে। আশা করি— পরবর্তী মিটিংয়ে আরও অ্যামিকেবল সলিউশন আসবে।’
‘আমরা গতকাল চীন ও মিয়ানমারের যে সদিচ্ছা দেখেছি, সবাই প্রত্যাশা করছে, তিনটি পক্ষই আশা করছে- আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে প্রত্যাবাসানটা শুরু হবে। আমরা ভাল ফলাফলের অপেক্ষায় আছি’ যোগ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের যেমন চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, একইভাবে মিয়ানমারের সঙ্গেও তাদের (চীনের) বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, মিয়ানমারের উন্নয়নে চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। সেই জায়গায় চীন যদি সত্যিকারভাবে চায় সেক্ষেত্রে অবশ্যই তারা মিয়ানমার সরকারকে প্রভাবিত করতে পারবে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৮ লাখ ২৯ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে এনামুর রহমান বলেন, ‘সেখানে থেকে তারা (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমার সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। মিয়ানমার সরকার ৪১ হাজার ৭১৯ জনকে ভেরিফাই করেছে। তাদের নেয়ার কথা তারা জানিয়েছে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন বলেন, ‘রোহিঙ্গা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলে এই সংখ্যা বেড়ে যাবে। মিয়ানমার সেখানে ক্লাস্টার করে তাদের রাখবে বলে জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি এখনও।’
হস্তান্তর চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গাদের চীন সরকার দুই হাজার ৫৫৪ মেট্রিক টন চাল দিয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে এই চাল আমরা পেয়েছি। চাল এখনও রোহিঙ্গাদের বিতরণ করা হচ্ছে। এজন্য আজকে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।’