স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক অনুদান নির্ভর ৭৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে পরামর্শক ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) এ প্রকল্পে পরামর্শক বাবদ ৩০ কোটি টাকার আবদার করেছিল।
এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে পরিকল্পনা কমিশন। বৈঠকের পর তা ২০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তারপরও কমিশনের দাবি, পরামর্শক ব্যয় আরও কম হওয়া উচিত।
‘প্রবৃদ্ধি: লোকাল ইকোনোমিক ডেভলপমন্টে (এলইডি)’ শীর্ষক ওই প্রকল্পে ৭০ কোটি টাকা অনুদান দেবে সুইস এজেন্সি ফর ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড করপোরেশন (এসডিসি)। এরইমধ্যে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন আল-রশীদের সভাপতিত্বে বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (এসপিইসি) সভায় প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় পরামর্শকসহ নানা খাতে ব্যয় কমানোর সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
জানা গেছে, প্রকল্পের মোট ব্যয় ৭৬ কোটি টাকা। বাকি ৬ কোটি টাকা সরকারি খাত থেকে মেটানো হবে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) কাজী জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের পরামর্শক বাবদ ৩০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ চেয়েছিল এলজিইডি। আমরা এসপিইসি সভায় তা ২০ কোটি টাকা করে দিয়েছি। তারপরও আমরা মনে করি, এই ব্যয় অনেক বেশি। এজন্য প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে আমাদের কমিশনে পাঠাবে। এর পরেই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী এবং ব্যাকস্টপিং পরামর্শকদের সংখ্যা জনমাস, ব্যয়ের সংস্থান, কর্মপরিধি (টিওআর) এবং কোন প্রতিবেদন নীতিমালা প্রণয়ন করবেন তা ছক আকারে পুনর্গঠিত করা এবং পরামর্শকের কর্মপরিধিতে (টিওআর) সুস্পষ্ঠভাবে উল্লেখ করার জন্য মতামত দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রকল্পে পরামর্শকের সংখ্যা যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে তাদের যাতায়াত ও বাসস্থান বাবদ ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং সহায়ক জনবল বাবদ ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা আনুপাতিক হারে কমানোর বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। ক্রয় পরিকল্পনায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরামর্শকদের সংখ্যা ও জনমাস সঠিকভাবে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। সম্পদের স্বল্পতা ও এলাকাভিত্তিক উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের (এলজিআই) সক্ষমতার অভাব রয়েছে। এলাকাভিত্তিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন বেসরকারি বিনিয়োগের সুযোগ, নগর অঞ্চলে ব্যবসা ও কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের (এলজিআই) সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
ভিশন ২০২১ এর মাধ্যমে সরকার যে ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক উন্নয়নের প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছে এ প্রকল্প সে অর্জনকে সহজ করবে। এর যৌক্তিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নের জনা নীতিমালা ও নির্দেশিকা প্রণয়ন সম্ভব হবে যা ব্যবসাবান্ধব ও কর্ম সৃজনের জনা পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।