আমেরিকান কংগ্রেসে নতুন নাগরিকত্ব প্রস্তাব পেশ করেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। ২০২১ সালের ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট বিলটি পাশ হলেই ১ কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেবে মার্কিন প্রশাসন। তবে শর্ত হ’ল, নাগরিকত্ব লাভ করতে হলে ৮ বছর আমেরিকায় থাকতে হবে অভিবাসী প্রার্থীকে।
মার্কিন কংগ্রেসের হাউজে বিলটি পেশ করেন ক্যালিফর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি লিন্ডা টি স্যাঞ্চেজ এবং সিনেটের বব মেনেনডেজ। কংগ্রেসের দুই কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্র্যাটরা। তবে, সেনেটে বিলটি পাশ করতে হলে অন্তত ১০ জন রিপাবলিকান সিনেটরের সমর্থন চাই। দুই কক্ষে বিলটি পাশ হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাতে সই করলেই সেটি আইন হয়ে যাবে।
এ আইন অনুযায়ী আমেরিকায় বসবাসরত অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বেশিরভাগকেই নাগরিকত্ব লাভের জন্য আট বছর বসবাস করতে হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে পাঁচ বছরের জন্য। এরপর, তারা গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আরও তিন বছর পর নাগরিকত্ব অর্জনের সুযোগ পাবেন তারা।
বিলে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিবাসন আইনের সর্বাধিক সুদূরপ্রসারী পরিবর্তনগুলিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি পরিবার ভিত্তিক অভিবাসন সম্পর্কিত বিধিনিষেধকে লাঘব করবে। ইতোমধ্যে আমেরিকাতে অবস্থানরত পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগ দেয়া স্বামী বা স্ত্রী এবং বাচ্চাদের জন্য সহজ করে তুলবে এবং এটি অভিবাসীদের চাকরির জন্য আমেরিকায় আসার অনুমতি দেয়ার জন্য শ্রমভিসা আরো বাড়াবে।
বৃহস্পতিবার উপস্থাপিত প্রস্তাবটি অভিবাসন ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে শ্রম ভিসার মেয়াদ বাড়াবে এবং লাখ লাখ অনিবন্ধিতদের নাগরিকত্বের পথ করে দেবে। বাইডেন প্রশাসন অনিবন্ধিত অভিবাসীদের গ্রেফতার ও নির্বাসনের সংখ্যা কমাতে অস্থায়ী নির্দেশিকাও জারি করেছে। জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি প্রদর্শন করে, অপরাধমূলক কাজের জন্য দোষী সাব্যস্ত, অথবা সম্প্রতি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছে এমন ব্যক্তি ব্যতিত অন্যদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার আগে অনুমতি নেয়ার জন্য অস্থায়ী নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
অভিবাসন এবং শুল্ক প্রয়োগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের জারি করা মেমোটিতে বলা হয়েছে যে, অনিবন্ধিত অভিবাসীরা যারা এ তিনটি শর্তে পড়েন না, তাদেরকে বিতাড়িত করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হিসাবে বিবেচনা করা হবে না। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো মায়োরকাস বলেছেন যে, তিনি ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাসন অগ্রাধিকার সম্পর্কে স্থায়ী নির্দেশনা জারি করবেন।
তবে কিছু অভিবাসন সমর্থক সংস্থা ইতোমধ্যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, বিল পাস করার জন্য রিপাবলিকান সমর্থন পাওয়ার সম্ভবনা খুব সম্ভবত নেই। এ প্রসঙ্গে বাইডেন বলেছেন, ‘অভিবাসন নীতিতে বহুদিন আগেই এ পরিবর্তন হওয়া জরুরি ছিল। ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকানদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এ বিল আনা হয়নি। আমেরিকানদের জন্য আনা হয়েছে।’ সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইম্স।