লেপ মুড়ি দিয়ে দিব্যি কাটিয়ে দেয়া যেত এই শীতকালটা বা কাটিয়া আশা যেত একটা বিলাসবহুল রিসর্টে লম্বা ছুটি কিন্তু বিগত পাঁচ বছর কোভিডের পর থেকে ওগুলো যেন আমাদের আর টানে না, শীতের সকালে লেপের তলায় শুয়ে থাকার প্রলোভন এড়িয়ে ধাক্কাধাক্কি করে খেয়া পাড় হয়ে ইঞ্জিন ভ্যানে করে লাফাতে লাফাতে পৌঁছে যাই নিজেদের গন্তব্যে গরমকাল হলে গলদ ধর্ম হয়ে আর বর্ষাকাল হলে ভিজতে ভিজতে এবং কাদায় পড়ে যাওয়া থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে নৌকা করে নিয়ে পৌঁছে যাই সেখানে—যেখানে আধুনিক শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি, সেখানে সেটি পৌঁছে দেওয়া। নদীর খাঁড়ি ধরে।
নদীর ধারা শান্ত, কিন্তু এর গভীরে লুকিয়ে আছে এক রহস্যময় সুর। ঠাণ্ডা বাতাস আমাদের শরীরে চেপে বসেছে, কিন্তু আমাদের সংকল্প আমাদের উষ্ণ রাখছে কারন আমাদের সঙ্গে রয়েছে আধুনিক শিক্ষার উপকরণ বই, খাতা, ল্যাপটপ, প্রজেক্টার সহ আধুনিক শিক্ষার অন্যান্য উপকরণ। প্রতিটি ঢেউ আর স্রোত আমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে যাত্রা সহজ নয়, কিন্তু লক্ষ্য বড়।
নদীর দুই পাশে ম্যানগ্রোভ আর ঘন গাছপালা যেন নিজস্ব ভাষায় কিছু বলছে। মাঝে মাঝে কোনো মাছ জলের উপর লাফিয়ে ওঠে বা একটি বক উড়ে যায়, মুহূর্তের জন্য সেই নীরবতাকে ভেঙে দেয়। এই যাত্রা চিরকালের মতো অনুভূত হলেও, আমার মিশন আমাকে বাস্তবে ধরে রাখে।
আমি কল্পনা করি সেই শিশুদের মুখ, যারা শিক্ষার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি জানি, আমি শুধু একটি নদী পার হচ্ছি না; আমি এক পৃথিবী থেকে আরেক পৃথিবীর সেতু গড়ছি। আমার সাথে আছে শিক্ষার আলো, যা অন্ধকারে আলোকিত করে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথ।