পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূত প্রক্রিয়া শুরু জুলাই-অক্টোবরে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: বেসরকারি খাতের দুর্বল পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করে একটি ইসলামী ধারার ব্যাংক করার সিন্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী জুলাই থেকে একীভূতকরণের পদক্ষেপ শুরু করে ১৫ অক্টোবর এই সাড়ে তিন মাসের মধ্যে প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এ বিষয়ে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই সময়ের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর আর্থিক তথ্য যাচাই করা হবে। এর মধ্যে কোন ব্যাংক যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টিতে ধার করা টাকা ফেরৎ দিতে পারে তবে সেই ব্যাংককে আর একীভূত করা হবে না। সেটিকে তার স্বকীয়ভাবে চলতে দেওয়া হবে। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধারের টাকা ফেলৎ দিতে ব্যর্থ হলে একীভূতকরণ করা হবে। এ বিষয়গুলো তদারকি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচটি টিম গঠণ করবে। টিমে ব্যাংকগুলো থেকেও লোক নেওয়া হবে।

বুধবার (৪ জুন) আলোচ্য পাঁচ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করে এ সিন্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিস্ট ব্যাংকগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। এবার একীভূত করার ব্যাংকগুলোর যে তালিকা করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মধ্যে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে যেসব ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাপানো টাকায় দেওয়া ঋণ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টিতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে দেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে পারবে এবং আর্থিক দুর্বল সূচকগুলোতে উন্নতি করতে পারবে সেগুলোকে একীভূত করার আওতায় থেকে বের করে দেওয়া হবে। ওইসব ব্যাংক স্বকীয় মর্যার্দা নিয়ে চলতে পারবে।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছিলেন দুর্বল ৬টি ব্যাংককে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত করা হবে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের নামও ছিল। পরবর্তীতে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা বলেছে, ন্যাশনাল ব্যাংক ইসলামী ধারার ব্যাংক নয়, সে কারণে ওইসব ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে পারে না। এছাড়া ব্যাংকটি নতুন ব্যবস্থাপনায় আর্থিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এসব কারণে তারা একীভ’ত হতে চাচ্ছে না। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও একীভূতকরনের তালিকা থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের নাম বাদ দেয়।

বিদেশি মালিকানায় পরিচালিত আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকও একীভূতকরণের আলোচনায় ছিল। তবে ব্যাংকটিতে বিদেশি মালিকানা থাকায় এ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মালিকপক্ষ ব্যাংকটিতে নতুন করে তহবিল জোগান দিতে চায়। কিন্তু সাবেক মালিক ওরিয়ন গ্রুপের পক্ষে একটি মামলা করায় বিদেশি মালিক পক্ষ ব্যাংকে মূলধন জোগান দিতে পারছে না। এর আগে ওরিয়ন গ্রুপ ব্যাংকটি ব্যাপক লুটপাট করেছে। ফলে তাদের শেয়ার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

বৈঠকে বলা হয়, একীভূতকরণের প্রথম ধাপ শেষে ব্যাংকগুলোকে সাময়িকভাবে সরকারি মালিকানায় নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই ব্যাংকগুলোর এমডিদের চুক্তি বাতিল হবে। আর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের বাছাই করা সদস্যসহ বিভিন্ন খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পর্ষদ গঠন করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্বিক দিক নির্দেশনায় ব্যাংকগুলো পরিচালিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত জানুয়ারিতে এসব ব্যাংকের সম্পদের প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ের (একিউআর) জন্য দুটি আন্তর্জাতিক অডিটর নিয়োগ দেয়। সেই কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এটি হলে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।

space for add

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০